
নতুন রাজনৈতিক দলে যোগ দেওয়ার অভিপ্রায় ব্যক্ত করে পদত্যাগ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
মঙ্গলবার দুপুরে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি।
এরপর এক সংবাদ সম্মেলনে নাহিদ বলেন, ‘ছাত্র-জনতার যে শক্তিতে স্বৈরাচারী সরকারের পতন হয়েছে, সেই শক্তিকে সংহত করতে আমি মনে করেছি যে, সরকারের থেকে সরকারের বাইরে রাজপথে আমার ভূমিকা বেশি হবে এবং আমার বাইরে যারা আমাদের সহযোদ্ধা রয়েছেন, তারাও এটিই চান। সেই পরিপ্রেক্ষিতে আমি আজ পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘গত ছয় মাসে আমি এবং আমরা আমাদের জায়গা থেকে চেষ্টা করেছি কাজ করে যাওয়ার। দুটি মন্ত্রণালয়ের বাইরেও অনেক অতিরিক্ত দায়িত্ব আমাদের পালন করতে হয়েছে। আমরা চেষ্টা করেছি এবং মন্ত্রণালয়গুলোতেও আমরা কিছু কাজ করেছি, সেই কাজের ফলাফল হয়ত সামনে জনগণ পাবে। ছয় মাস খুবই কম সময়। তারপরও আমি চেষ্টা করেছি। আমার কাজ ও ফলাফল জনগণ মূল্যায়ন করবে। আজ থেকে আমি সরকারের কোনো দায়িত্বে নেই।’
এসময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে নাহিদ বলেন, ‘আমার পরে কে দায়িত্ব নেবে সেটা উপদেষ্টা পরিষদই ঠিক করবে। আমি আমার জায়গা থেকে মনে করেছি, আমাকে বাইরে প্রয়োজন। এখনো আমাদের গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়িত হয়নি। বিচার এবং সংস্কারের যে প্রতিশ্রুতি নিয়ে এই সরকার গঠিত হয়েছিল, ছাত্ররা এসেছিল, সেই প্রতিশ্রুতি পূরণে অন্য যে দুজন রয়েছেন, তারা মনে করছেন সরকারে তাদের এখনো দায়িত্ব রয়েছে। তারা এখনো সরকারে থেকেই জনগণকে সার্ভ করবেন। তারা যদি রাজনীতি করার প্রয়োজন বোধ করেন, তখন হয়ত সরকার ছেড়ে দেবেন।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নতুন যে রাজনৈতিক শক্তি এবং দল গঠন হচ্ছে, সেখানে অংশগ্রহণ করতে আমার অভিপ্রায় আছে। জনগণের সঙ্গে মিশে আবারও জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করা এবং আমাদের যে গণঅভ্যুত্থান, এর যে প্রতিশ্রুতি সেটা বাস্তবায়নে মাঠে থেকে কাজ করার লক্ষেই আমি সরকার থেকে পদত্যাগ করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা তো ছিলই। আমরা সেই সীমাবদ্ধতাগুলো কাটানোর চেষ্টা করেছি সবসময় এবং এখানে সীমাবদ্ধতা ছিল, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ছিল, আমরা এসে এই ব্যুরোক্রেসিকে যেভাবে পেয়েছি, এখানে পুলিশের আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি হয়েছে আন্দোলনের পরে এবং একইসঙ্গে জুলাইয়ের যারা গণহত্যাকারী তাদের গ্রেপ্তার, বিচারের বিষয়টা, সে বিষয়ে আমাদের কিছু সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও আমরা কাজ করেছি।’
নাহিদ বলেন, ‘আমি জনপ্রশাসন কমিটির একটি দায়িত্ব দুই সপ্তাহের মতো ছিলাম এবং দুই সপ্তাহের মিটিংয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, যারা ২০১৮ সালের ডিসি ছিল এবং দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ছিল তাদের সরানোর ব্যবস্থা, এরকম কিছু উদ্যোগ আমরা নিয়েছি।’
নাহিদ আরও বলেন, ‘আমি আশা করব যে, অন্তর্বর্তী সরকার সামনের দিনগুলোতে জনগণের যে আকাঙ্ক্ষা, গণঅভ্যুত্থানের যে আকাঙ্ক্ষা, সেই আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে সচেষ্ট হবে এবং দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং দ্রব্যমূল্য নিরসনে সফলতা দেখাতে পারবে।’