
গাজা যুদ্ধে নিহতদের প্রতি সংহতি জানাতে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের বাসিন্দারা নতুন একটি মসজিদ নির্মাণ করেছেন। তারা মসজিদটির নামকরণ করেছেন ফিলিস্তিনি অঞ্চল 'গাজা'র নামে।
আরব নিউজ জানিয়েছে, সম্প্রতি উদ্বোধন করা মসজিদটি কাবুলের কোয়া-ই-মারকাজ এলাকায় অবস্থিত। শহরের গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক প্লাজা এবং বিখ্যাত কার্পেট মার্কেটের কাছাকাছি এটি নির্মাণ করা হয়।
দ্বিতল ভবনের মসজিদটিতে প্রায় ৫০০ জন প্রার্থনা করতে পারেন। কাবুল পৌরসভার দান করা জমিতে স্থানীয় জনসাধারণের অনুদানে এটি নির্মাণ করা হয়।
তহবিল সংগ্রহের নেতৃত্বদানকারী ব্যবসায়ী হাজি হাবিবুদ্দিন রেজায়ি আরব নিউজকে বলেন, গাজার পুরুষ, নারী, শিশু, যুবক এবং প্রবীণদের ভূমি রক্ষায় সংগ্রাম ও আত্মত্যাগকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য মসজিদটির নামকরণ করা হয়েছে 'গাজা মসজিদ'।
তিনি বলেন, মসজিদ নির্মাণের কাজ শেষ হওয়ার আগে ফিলিস্তিন, আকসা ও গাজাসহ কয়েকটি নামের প্রস্তাব ছিল। তবে এটি নির্মাণে অংশগ্রহণকারীদের বেশিরভাগই সংহতির প্রতীক হিসাবে গাজাকে বেছে নিয়েছে।
আফগানদের মধ্যে ফিলিস্তিনের প্রতি ব্যাপক সমর্থন রয়েছে। তারা ভালো করেই জানেন ১৯৭৯-১৯৮৯ সালের সোভিয়েত-আফগান যুদ্ধ এবং ২০০১ সালে মার্কিন আগ্রাসনের সময় বিদেশি দখলদারিত্বের অধীনে বেঁচে থাকার অর্থ কী।
আফগানিস্তান প্রথম অ-আরব দেশ, যারা ১৯৪৮ সালে ফিলিস্তিনি জাতীয় পরিষদের স্বাধীনতার ঘোষণাকে স্বীকৃতি দেয়। প্রতিটি আফগান সরকার ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ও ভূমি দখলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়িয়েছে।
২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েলের সর্বশেষ প্রাণঘাতী হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে আফগান মসজিদের ইমামরা নিয়মিত ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার জন্য বিশেষ প্রার্থনা করেছেন। গত সপ্তাহে যখন যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়, তখন আফগান পরিবারে এবং জনসমাগমস্থলে উৎসবের আয়োজন করা হয়।
গাজা মসজিদের ইমাম আব্দুরাকিব হাকিমি বলেন, আফগানরা অনুদান, প্রার্থনা এবং সংহতিসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে যতটা সম্ভব সহায়তা করার চেষ্টা করছে। ফিলিস্তিন ও গাজার জনগণ গত দেড় বছরে যে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গেছে, তার জন্য প্রত্যেক মুসলমান ও মানুষের অবশ্যই তাদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করা উচিত।
মসজিদের মুসল্লিরা আরব নিউজকে বলেন, তারা আশা করেন যে তাদের দেশ গাজার জন্য আরও বেশি কিছু করতে পারবে। মুসল্লিদের একজন আসাদুল্লাহ দায়ি বলেন, ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের কর্মকাণ্ড গণহত্যা ছাড়া আর কিছুই নয়। নিরীহ নারী ও শিশুদের হত্যা করা হয়েছে এবং বাড়িঘর ধ্বংস করা হয়েছে। ইসলামের ইতিহাসে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইহুদিবাদী নির্যাতনের মতো এত নিপীড়ন আর কখনো হয়নি।