প্রকাশ: শনিবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ১:০০ এএম | অনলাইন সংস্করণ

অনলাইনভিত্তিক অ্যাপ এমটিএফইতে বিনিয়োগ করে প্রতারণার শিকার হয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জে দুই সিইও'র বিরুদ্ধে মামলা করেছেন এক ব্যবসায়ী। আবুল বাসার নামে এক ভুক্তভোগীর করা অভিযোগ আমলে নিয়ে ডিবিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবু কাহার এ আদেশ দেন। এমটিএফই'তে বিনিয়োগকারী আবুল বাসারের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের বেলেপুকুরে।
মামলায় এমটিএফই'র দুই সিইওকে আসামি করা হয়েছে। তারা হলেন-চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার আদিনা কলেজ এলাকার আব্দুর রশিদের ছেলে মো. তরিকুল ইসলাম ও গোমস্তাপুর উপজেলার চৌডালার কদমতলী গ্রামের মৃত জুল মো. সর্দারের ছেলে মো. নুরুন্নবী পলাশ। মামলায় আরও পাঁচ-ছয়জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিশ্বরোড মোড়ে এমটিএফই'র অফিস করার জন্য আসে দুই আসামি। তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সরাসরি ডেকে নিয়ে কোম্পানির অফিস করার নামে আবুল বাসারের কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বিনিয়োগ কারী জানান চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার ৫/৬ তথাকথিত সিইও কে মুখোমুখি করলে বিষয়টি উন্মোচিত হবে।
বাদীর আইনজীবী ড. মো. তসিকুল ইসলাম বলেন, এমটিএফই'র সিইও পদে থাকা মো. তরিকুল ইসলাম ও নুরুন্নবী পলাশের বিরুদ্ধে বিশ্বাস ভঙ্গ ও প্রতারণার অভিযোগ এনে মামলা হয়েছে। বাদির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শোনানি শেষে আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। এ ব্যাপারে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ এর অফিসার ইন চার্জ বাবুল উদ্দিন সরদার বলেন বিষয়টি তদন্ত চলছে এবং বিষয়ের গভীরতা পর্যালোচনা পুর্বক এগিয়ে যাচ্ছে অচিরেই মুল রহস্য উন্মোচিত হবে।
উল্লেখ্য, মেটাভার্স ফরেন এক্সচেঞ্জ গ্রুপ অর্থাৎ এমটিএফই একটি অ্যাপ। শুয়ে-বসে কাজ করলেই অ্যাকাউন্টে আসবে ডলার। আর এতে বিনিয়োগ করতে হবে। যে যত বেশি বিনিয়োগ করবে, তার তত ডলার আসবে। এক কথায় বিনিয়োগ করলেই মিলবে উচ্চ মুনাফা। এমনই অফার দিয়েছিলেন ওই প্রতিষ্ঠানটির সিইওরা। চাঁপাইনবাবগঞ্জে এই সিইওদের সংখ্যা ২০ জনের মতো। কোম্পানির কোনো লাইসেন্স নেই, নিবন্ধনও নেই। অফিস নেই, কোনো কর্তৃপক্ষও নেই। ছিল শুধুমাত্র দেশের বাইরে থেকেই নিয়ন্ত্রিত একটা অ্যাপস ও ওয়েবসাইট। মূলত এর মাধ্যমেই অবৈধ অনলাইন গ্যাম্বলিং ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগ করে লেনদেন করতেন শহর কিংবা গ্রামের শত শত মানুষ। মাল্টিলেভেল মার্কেটিং বা এমএলএম পঞ্জি মডেলে ব্যবসা পরিচালনা করছিল এমটিএফই। কোম্পানিটি এমএলএম ব্যবসার ছদ্মবেশে অনলাইন গ্যাম্বলিং ও ক্রিপ্টো ট্রেডিং করত। ফোরেক্সও হতো এখানে। এটির ওয়েবসাইট ও অ্যাপ ছিল। লেনদেনও হতো ওয়েবসাইট বা অ্যাপেই। এই ব্যবসায় জড়িত প্রতারক চক্র বিভিন্ন নামিদামি হোটেলে মিটিং করে বিনিয়োগকারী ধরার ফাঁদ পাততো। স্বল্প বিনিয়োগে রাতারাতি কোটিপতি হওয়ার স্বপ্ন দেখাত তারা। আর এই ফাঁদে পড়েই মানুষ নিঃস্ব। ধারণা করা হচ্ছে- বিটকয়েনে লেনদেনের নামে প্রতিষ্ঠানটি চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে।