
কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীতে এসএসসির প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে নেহাল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষক ও একজন অফিস সহায়ক (পিয়ন) কে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে ব্যবস্থাপনা কমিটি।
সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক খলিলুর রহমান পলাশ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সাময়িক বরখাস্ত হওয়া ছয়জন হলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব লুৎফর রহমান, সহকারী শিক্ষক জোবায়ের হোসেন, আমিনুর রহমান রাসেল, হামিদুর রহমান, সোহেল আল মামুন ও অফিস সহায়ক (পিয়ন) সুজন মিয়া। তারা সবাই জেল হাজতে রয়েছেন।
এর আগে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে গত মঙ্গলবার রাতে গ্রেফতার হয় প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব লুৎফর রহমান, ইংরেজী শিক্ষক আমিনুর রহমান রাসেল ও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক জোবায়ের হোসাইন। ওই রাতেই চারজন শিক্ষকের নাম উল্লেখ করে আরও অজ্ঞাতনাম ১০ থেকে ১২ জনকে আসামী করে ভুরুঙ্গামারী থানায় একটি মামলা হয়। পরে বৃহস্পতিবার আরও দুই শিক্ষক হামিদুল ইসলাম ও সোহেল আল মামুন এবং অফিস সহায়ক (পিয়ন) সুজন মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় পাঁচ শিক্ষকসহ মোট ছয়জন গ্রেফতার হলেও মামলার অপর আসামী অফিস সহকারী আবু হানিফ পলাতক রয়েছেন।
জানা গেছে, ২০১৬ সাল থেকে একই পদ্ধতিতে অষ্টম শ্রেনির প্রশ্নপত্র ফাঁস শুরু করে চক্রটি। তখন উদ্দেশ্য ছিল নিজ বিদ্যালয়ের ফলাফল ভালো করা। আর ফাঁসের সাথে জড়িত ছিল ২/৩ জন শিক্ষক। পরবর্তীতে চক্রের সদস্য সংখ্যা বাড়ানো হয় এবং বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছাড়াও অন্যান্য জেলায় প্রশ্নপত্র বিক্রি করা হয়। প্রশ্ন ফাঁস হবার পর তদন্ত কমিটি তদন্তকালে জানতে পারে শুধু তত্ত্বীয় প্রশ্ন ফাঁস করা হয়নি এবং সাথে নৈর্ব্যক্তিক বিষয়ের প্রশ্নপত্রও ফাঁস করা হয়েছে।
এদিকে সাধারন শিক্ষার্থীরা জানান, বাংলা ২য়পত্র ইংরেজী ১ম ও ২য় পত্রের প্রশ্ন ফাঁস হলেও ওই বিষয়ে সরকার কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি। এর ফলে যারা প্রশ্ন পেয়েছে তারা লাভবান হলো আর যারা প্রশ্ন পায়নি তারা বি ত রয়ে গেল। তারা প্রশ্নফাঁসের সাথে জড়িতদের শাস্তির দাবী জানান।
নেহাল উদ্দিন পালইট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক খলিলুর রহমান জানান, গত বৃহস্পতিবার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় তাদের বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও রবিবার রাতে চিঠি সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে অনলাইনে পাঠানো হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি (তদন্ত) আজাহার আলী জানান, পলাতক আসামীকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। গ্রেফতারকৃত দের তিন দিনের রিমান্ড দেয়ার আবেদন করেছে পুলিশ। আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর আদালত শুনানির দিন ধার্য করেছেন।
উল্লেখ্য দায়িত্বে অবহেলার কারনে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত এবং দায়িত্বে অবহেলা আছে কিনা এ বিষয়ে জানতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার দীপক কুমার দেব শর্মাকে কারন দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। এ ব্যাপারে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।