শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ৫ বৈশাখ ১৪৩১

শিরোনাম: ইরানের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা দিল যুক্তরাজ্য-যুক্তরাষ্ট্র    স্বর্ণের দাম ফের বাড়ল    বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বাড়ল, খোলা তেলে কমল    বিএনপি নেতারা সন্ত্রাসীদের সুরক্ষা দেওয়ার অপচেষ্টা করছে: কাদের    উপজেলা নির্বাচন : এমপি-মন্ত্রীদের সন্তান ও আত্মীয়রা প্রার্থী হতে পারবেন না    চুয়াডাঙ্গায় বইছে তীব্র তাপদাহ, হিট এলার্ট জারি    তিন দিনের সফরে ঢাকায় আসছেন মার্কিন প্রতিনিধিদল   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
নদী ভাঙনে দিশেহারা তিস্তাপাড়ের মানুষ
লালমনিরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ: শনিবার, ১৩ আগস্ট, ২০২২, ৯:৪৯ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

পানি কমে যাওয়ায় ভাঙন বেড়েছে তিস্তাপাড়ে। চোখের সামনে বিলীন হচ্ছে বসতভিটা ফসলি জমি। মাথা গোঁজা ঠাঁই পেতে দিশেহারা তিস্তাপাড়ের মানুষ। কিন্তু  ভাঙ্গন রোধে লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের সরকারী বরাদ্দ কোন কাজেই আসছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সরকারের বরাদ্দকৃত কোটি কোটি টাকা পানিতেই শেষ হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, বর্ষা মৌসুমে অতিরিক্ত পানি প্রবাহের ফলে তিস্তা নদীতে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়। বন্যায় সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তিস্তার বাম তীরের জেলা লালমনিরহাট। তিস্তা নদী জন্মলগ্ন থেকে খনন না করায় পলি পড়ে ভরাট হয়েছে নদীর তলদেশ। ফলে পানি প্রবাহের পথ না পেয়ে বর্ষাকালে উজানের ঢেউয়ে লালমনিরহাটসহ ৫টি জেলায় ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়। এ সময় নদী ভাঙনও বেড়ে যায় কয়েকগুণ। প্রতি বছরই নদী পরিবর্তন করছে তার গতিপথ। বর্ষায় ভয়াবহ বন্যার ধকল কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই ভাঙন আতঙ্কে পড়ে তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা। গেল সপ্তাহে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পরপরই তীব্র ভাঙনের মুখে পড়ে নদীপাড়ের মানুষ। এক একটি পরিবার ৮/১০ বার নদী ভাঙনের শিকার হয়ে সরিয়ে নিয়েছেন বসতভিটা। কেউ কেউ রাস্তার ধারে বা বাঁধের পাশে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।



একটি সুত্র জোড় দাবী তুলে বলেন, লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান যোগদানের পর থেকে জেলার বুক জুড়ে বয়ে চলা তিস্তা ও ধরলার ভাঙ্গন রোধ প্রকল্পগুলোতে ব্যাপক নয়-ছয় করা হচ্ছে। বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারের নামে বরাদ্দ আগে আসলেও কাজ শুরু করেন বর্ষাকালে। কারণ, বন্যার অথৈই পানিতে কম কাজ করে বেশি হিসাব ধরানো সম্ভব। পরিদর্শনে কেউ আসলে বলা ও বুঝা সম্ভব যে, বন্যার তোড়ে উন্নয়ন কাজ ভেসে গেছে। তাছাড়াও সদর উপজেলার মোগলহাট, বড়বাড়ী, গোকুন্ডা, রাজপুর ও খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানের ভাঙ্গন রোধের কাজগুলো সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করলে বেশ অনিয়মের প্রমাণ মিলবে।

অপর আরোও একটি সুত্র জানান, নদী ভাঙ্গন রোধে জরুরী বরাদ্দ নির্বাহী প্রকৌশলী তার পছন্দের ঠিকাদার দিয়ে করান। জরুরী কাজে জরুরী লুটপাট ভাল হয়। যার বড় প্রমাণ, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান সুজন। তিনি খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের তিস্তার ভাঙ্গন পরিদর্শন করে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জোড় চাপ দিয়ে জরুরী কিছু জিও ব্যাগ ডাম্পিং করে নেওয়ায় কয়েকটি বসতবাড়ি ও আবাদি জমি কিছুটা রক্ষা পায়। উপজেলা চেয়ারম্যান না হলে একাজটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষে এতো তারাতারি করা সম্ভব হতো না।

স্থানীয়রা জানান, সরকার জরুরী ভিত্তিতে কাজের জন্য কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দিলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড তা বাস্তবায়নে গড়িমসি করছেন। একই স্থানে বার বার লোক দেখানো দায়সারা কাজ করছেন। ফলে গত এক সপ্তাহে সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের খামারটারী ও পূর্ব কালমাটি গ্রামের প্রায় ১০/১৫টি বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙনের মুখে পড়েছে চোংগাডারা উচ্চ বিদ্যালয়, খুনিয়াগাছ ইউনিয়ন পরিষদ, ভূমি অফিস, খুনিয়াগাছ উচ্চ বিদ্যালয়, মসজিদ এবং মন্দিরসহ নানা প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনা। নদীর কিনারায় পড়েছে নির্মাণাধীন চোংগাডারা উচ্চ বিদ্যালয়ের চারতলা বিশিষ্ট ভবনসহ শতাধিক বসতবাড়ী। গেল সপ্তাহে সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান সুজন পরিদর্শন করে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জোড় চাপ দিয়ে কিছু জিও ব্যাগ ডাম্পিং করে কিছুটা রক্ষা করেছেন। নয়তো এসব স্থাপনা বিলীন হয়ে যেত বলে দাবী করেন স্থানীয়রা। পাশের গ্রাম খামারটারীর আছিবি, সোনাবি, আকলিমা বলেন, রাতে ঘুমাতে পারি না। কখন যে ঘর বাড়ি নদীতে ভেঙে যায়। সেই আতঙ্কে ঘুম নেই। কয়েকদিন আগে উপজেলা চেয়ারম্যান কিছু জিও ব্যাগ দিয়ে কোনো রকম ভাঙনটা রক্ষা করেছেন। নয়তো এতদিনে এ গ্রাম নদীগর্ভে বিলীন হত। রিলিফ নয়, তারা দ্রুত নদী খনন করে স্থায়ী সমাধান দাবি করেন। শুধু খামারটারী আর পূর্ব কালমাটি নয়। ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে তিস্তা নদীর বাম তীর ঘেঁষা প্রতিটি গ্রামের মানুষ। এসব মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি তিস্তা নদী খনন করে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, ৫টি উপজেলা নদীবেষ্টিত হলেও এবারে তিস্তার ভাঙনটা সদর উপজেলায় কিছুটা বেশি। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় ভাঙন রোধে জরুরি ভিত্তিতে কাজ চলমান রয়েছে। কিছু কিছু স্থানে রোধ করা সম্ভব হয়েছে।

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]