বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শিরোনাম: শুক্রবার নাগাদ আসতে পারে ভারতের পেঁয়াজ    বিএনপি স্বাধীনতার মর্মার্থকে অকার্যকর করতে চায়: কাদের    বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে এগিয়ে নেওয়াই যুক্তরাষ্ট্রের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা    একনেকে ৮ হাজার ৪২৫ কোটি টাকার ১১ প্রকল্প অনুমোদন    ময়মনসিংহে বাসচাপায় অটোরিকশার তিন যাত্রী নিহত    বায়ুদূষণের শীর্ষে দিল্লি, তৃতীয় ঢাকা    কাতারের আমির ঢাকায় আসছেন এপ্রিলে   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি যৌক্তিক
#বিদ্যুৎ খাতে বাংলাদেশের মতো আর কোনো দেশ এতো ভর্তুকি দিচ্ছে না: ইঞ্জি. হাসনাত মিয়া। #বাংলাদেশ নয়, পৃথিবীর সব দেশেই তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে: রবিন মোহাম্মদ আলী। #সাধারণ মানুষকে সরকারের ভর্তুকির বিষয়টি বোঝাতে হবে: ড. বি এম রাজ্জাক। #জ্বালানি তেলের সাশ্রয়ের জন্য লোডশেডিং হচ্ছে: শেখ মোহাম্মদ ফাউজুল মুবিন।
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: রোববার, ৭ আগস্ট, ২০২২, ১১:৪৬ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

আমার কাছে অবাক লাগে যারা বাংলাদেশে বসে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় লেখালেখি করে এই জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে। তাদের নিয়ে আমার একটি প্রশ্ন জাগে যে তারা কি আদৌ এই বিষয় নিয়ে সঠিক পর্যবেক্ষণ করতে পারে কিনা। বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির কারণে শেখ হাসিনা সরকার দেশে তেলের মূল্য বৃদ্ধি করেছে। 



দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৭৮৯তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা। ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের নির্দেশনা ও পরিকল্পনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- জার্মান দূতাবাসে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনারারি কনস্যুলেট, ফর বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার হাসনাত মিয়া, ভিয়েনা বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি রবিন মোহাম্মদ আলী, যুক্তরাজ্যে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক রিসার্চ সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক, লন্ডন মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির প্রভাষক ড. বি এম রাজ্জাক, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শেখ মোহাম্মদ ফাউজুল মুবিন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভোরের পাতার বিশেষ প্রতিনিধি উৎপল দাস।

ইঞ্জিনিয়ার হাসনাত মিয়া বলেন, আমার কাছে অবাক লাগে যারা বাংলাদেশে বসে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় লেখালেখি করে এই জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে। তাদের নিয়ে আমার একটি প্রশ্ন জাগে যে তারা কি আদৌ এই বিষয় নিয়ে সঠিক পর্যবেক্ষণ করতে পারে কিনা। আজকে ভোরের পাতার একটি সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারলাম যে বাংলাদেশের আশে পাশে যেসব প্রতিবেশী দেশ আছে তারা তাদের দেশে ডিজেল ও অকটেন যে দামে বিক্রি করছে তার থেকেও বাংলাদেশের সরকার কতখানি ভর্তুকি দিয়ে দেশের জনগণকে দিচ্ছে। বর্তমান সরকার বাংলাদেশে ১০০% বিদ্যুতায়নের দেশ গড়েছে যেখানে আগে ছিল ৪৩%। তার মানে আমরা ক্যাপাবিলিটি অর্জন করেছি। এখন ক্যাপাসিটিটা কমিয়ে দিয়ে লোডশেডিং করা হচ্ছে। আমাদের জার্মানিতেও কিন্তু একই অবস্থা। এখানে আগে থেকেই বলে দেওয়া হচ্ছে আপনারা বিদ্যুৎ কম পাবেন এবং তাই হচ্ছে এখানে। এখানে কিন্তু জনগণ ও পত্রপত্রিকা তেমন কথা বলেছে এই বিষয়ে কারণ তারা জানে এই সম্পর্কে। কিন্তু বাংলাদেশে কিছু হলুদ সাংবাদিক ও স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি আছে যারা এই বিষয়টাকে শুধু শুধু মাত্রাতিরিক্ত ভাবে ব্যাখ্যা করছে জনগণের কাছে। দেশের জনগণের জন্য বাংলাদেশ সরকার বিদ্যুৎ খাতে যেভাবে দিনের পর দিন ভর্তুকি দিচ্ছে সেটা কিন্তু পৃথিবীর অন্যান্য দেশে আর কেউ দিচ্ছে না। 
 
রবিন মোহাম্মদ আলী বলেন, আজকে জ্বালানি তেলের দাম যে বৃদ্ধি পেয়েছে সেটা কেন হয়েছে এই বিষয়টা আমাদের আগে ভেবে দেখতে হবে। সরকার কি জানেনা যে, তেলের দাম বাড়ালে দেশে মানুষের অবস্থা কি হবে? সরকার সেটা ভালো করেই জানে। প্রায় তিন মাস ধরে সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা এই খাতে ভর্তুকি দিয়ে আসছে বাংলাদেশ সরকার। এই ভর্তুকির বিষয়টা কিন্তু আমাদের মধ্যে অনেকেই জানেন না। আমরা যারা বাংলাদেশে বাহিরে থাকি তারা কিন্তু ভালো করেই জানি যে বাংলাদেশের বাহিরে কত % তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। শুধু বাংলাদেশ নয়, পৃথিবীর সব দেশেই তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। কারণ আন্তর্জাতিকভাবে তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকার যদি তিন মাসে হাজার হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দেয় অথবা দেশে এক সেক্টরের পিছনে যদি সরকারের হাজার হাজার কোটি টাকা চলে যায় তাহলে কিন্তু সেগুলো অন্যান্য খাতেও প্রভাব ফেলবে। বাংলাদেশে কিছু মানুষ আছে যারা ঘাপটি মেরে বসে থাকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের দোষ ধরার জন্য। তারা কি জানে না যে পৃথিবীর অন্যান্য দেশে তেলের মূল্য কি কারণে বৃদ্ধি পেলো? বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির কারণে শেখ হাসিনা সরকার দেশে তেলের মূল্য বৃদ্ধি করেছে।

ড. বি এম রাজ্জাক বলেন, সারা বিশ্বে একটা অস্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করছে। জ্বালানি তেলে সংকট মূলত শুরু হয় রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে। এখন আমরা যদি দেখি যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, চায়নার মতো দেশ গুলো কিন্তু অর্থনৈতিকভাবে অনেক শক্তিশালী দেশ। তাদের রিজার্ভের পরিমাণ বাংলাদেশের থেকে অনেক বেশী। কিন্তু জ্বালানি তেলের দাম নির্ধারণ করার ক্ষেত্রে তারা কিন্তু সরাসরি পদক্ষেপ নিয়েছে। এবার জ্বালানি তেলে যে মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে সেটা কিন্তু গত ১৪ বছরে সব থেকে বেশী। আমরা যারা ইউকে থাকি তাদের কথায় যদি উদাহরণ সরূপ বলি তাহলে প্রথমে বলতে চাই যে, আগে আমাদের গাড়িতে ৩৬ পাউন্ড খরচ করলে তেলের ট্যাঙ্ক পুরো ভরে যেতো কিন্তু সেই ট্যাঙ্ক এখন ৭০ পাউন্ডে ভরতে হচ্ছে। এখানে জ্বালানি তেলের দাম ৪৪.৪% বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা যদি চায়নার দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাবো সেখানে জ্বালানি তেলের দাম ৪০% বৃদ্ধি পেয়েছে। এবং সর্বশেষ যদি আমরা ভারতের দিকে তাকায় তাহলে দেখতে পাবো যে, সেখানে জ্বালানি তেলের দাম ২৬% বৃদ্ধি পেয়েছে। তাহলে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে এইসকল উন্নত দেশে কিন্তু জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার ক্ষেত্রে সরাসরি দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে। বিশ্ববাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তেলের দাম বৃদ্ধি ও হ্রাস করার প্রক্রিয়া সব দেশেই চলমান। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার প্রায় ৭ মাস যাবত কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। এই সময়ে বাংলাদেশ ৯৫০০ কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছে।

শেখ মোহাম্মদ ফাউজুল মুবিন বলেন, বর্তমানে দেশে লোডশেডিং কেনো হচ্ছে সেটা আমাদেরকে আগে ভেবে দেখতে হবে। লোডশেডিং মূলত হচ্ছে জ্বালানি তেল সাশ্রয় করার জন্য। একসময় দেশে দিনে ৮-৯ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকতো না। যখন দেশে তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হতো তখন এবং সে সময় ৮-৯ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকতো না তখন আসলে মানুষ কতটুকুন বিদ্যুৎ পেতো। আর এখন যখন ২৫০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে এবং লোডশেডিং মাত্র ১-২ ঘণ্টা হচ্ছে তখন কিন্তু এটা আসলেই অনেক কম। এছাড়া জ্বালানি তেলের এমন মূল্য বৃদ্ধি শুধু বাংলাদেশেই নয়, আমাদের আশেপাশের প্রতিবেশী দেশগুলোতেও বৃদ্ধি পেয়েছে। রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে দেশে জ্বালানি তেলের দামসহ খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে সকল দেশের অর্থনীতি এমুহূর্তে কিছুটা চাপে। চাপ সামাল দিতে লোডশেডিং, অপ্রয়োজনীয় ব্যয় হ্রাস, তেলের দাম বৃদ্ধি করে সেসকল দেশের সরকার চাপ সামাল দেবার চেষ্টা করে যাচ্ছে। বর্তমান সরকারের আমলে জ্বালানি তেলের নাম একাধিকবার কমানোর নজির রয়েছে। ২০১৬ সালের ২৪ এপ্রিল জ্বালানি তেলের দাম কমানো হয়েছিল। এর আগেও ২০০৯ সালে ১৩ জানুয়ারি ডিজেল ও কেরোসিনের দাম কমানো হয়েছিল আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সমন্বয় করে।

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]