প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২ আগস্ট, ২০২২, ৭:৪০ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার স্থানীয় সাংবাদিক মুজাহিদুল ইসলাম নাঈমকে হত্যাচেষ্টার মামলায় গ্রেপ্তার এক আসামির জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার ফরিদপুরের নয় নম্বর আমলী আদালতের বিচারক মারুফ হোসেন এই আদেশ দেন।
কারাগারে পাঠানো আসামির নাম পারুল বেগম। তিনি এই মামলার দুই নম্বর আসামি। একইদিন দুপুরে সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় আলফাডাঙ্গায় থানায় একটি মামলা হয়। এতে প্রধান আসামি করা হয় আলফাডাঙ্গার পৌর মেয়রের ভাই জাপান মোল্লাকে।
বাদী পক্ষ্যের আইনজীবী অনিমেশ রায় বলেন, ‘সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় গ্রেপ্তার আসামি পারুল বেগমকে আজ আদালতে তোলা হয়। পরে শুনানি শেষে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেন।’
মধুখালী সার্কেলের (আলফাডাঙ্গা, মধুলাখালী ও বোয়ালমারী) সহকারী পুলিশ সুপার সুমন কর বলেন, ‘সাংবাদিককে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় আজ থানায় মামলা হয়েছে। গতকালই আমরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত একজনকে আটক করেছিলাম। আজ সেই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে তোলা হয়।’
আলফাডাঙ্গা থানা পুলিশ জানিয়েছে, সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় দুইজনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত চার-পাঁচজনের নামে হত্যাচেষ্টার মামলা হয়। মামলা নম্বর তিন। ধারা-১৪৩/৩৪১/৩২৩/৩২৪/৩২৫/৩০৭/৩৭৯/৫০৬। মামলার অন্যতম প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান চলছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, সোমবার দুপুরে স্থানীয় বাসস্টাণ্ডে মারধরের শিকার হন সাংবাদিক মুজাহিদ। তাকে মারধরের ঘটনায় আলফাডাঙ্গা পৌরসভার মেয়র সাইফুর রহমান সাইফারের ভাই জাপান মোল্লা ও তার পাঁচজন-ছয়জন সহযোগী জড়িত ছিলেন। ঘটনার সময় মুজাহিদকে লোহার রড, স্ট্যাম্প, দেশিয় অস্ত্র-সস্ত্র দিয়ে পেটানো হয়। এসময় স্থানীয়রা মুজাহিদকে রক্ষায় এগিয়ে এলে তাদের ওপর চড়াও হয় দুর্বৃত্তরা। এতে বেশ ক’জন আহত হন। সাংবাদিক মুজাহিদ ঢাকাটাইমস পত্রিকার নিজস্ব প্রতিবেদক ও আলফাডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সাংগাঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
জানা গেছে, আলফাডাঙ্গার রাজধানী পরিবহনের কাউন্টারে টিকেট কিনতে যান রমিজ নামের এক যুবক। তিনি ঢাকার একটি টিকেটের দাম পরিশোধ করে বাসে ওঠেন। বাস ছাড়ার আগ মূহুর্তে ‘ক্যাশ কাউন্টার’ থেকে বলা হয় রমিজ টিকিটের টাকা দেননি। তাই তাকে ঢাকায় যেতে দেওয়া হবে না। বিষয়টি জানিয়ে নাঈমের সহযোগীতা চান রমিজ। ঘটনাস্থলে এসে বিষয়টির মিমাংসা করার কথা বলতেই সাংবাদিক মুজাহিদের ওপর চড়াও হয় কাউন্টারের ম্যানেজার জাপান ও তার সহযোগীরা। জাপান স্থানীয় পৌর মেয়র সাইফারের ছোট ভাই। কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে মুজাহিদকে বেধড়ক পেটানো হয়। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। বর্তমানে মুজাহিদ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
থানা সূত্রে জানা গেছে, সাংবাদিক মুজাহিদকে নির্যাতনকারী জাপান মোল্লা তার স্ত্রী সোহানা বেগমকে বেধড়ক মারপিট করে আহত করেন। পরে তাকে আলফাডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ৭ জুন উপজেলার কুসুমদি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। হাসপাতালে ভর্তি অবস্থায় সোহানার মৃত্যু হয়। পরে বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন বলে চালিয়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে।