মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ৩ বৈশাখ ১৪৩১

শিরোনাম: গরমে বাড়ছে জ্বর, ডায়রিয়াসহ নানান রোগে প্রকোপ    তামিমের দলে ফেরা নিয়ে যা জানালেন শান্ত    জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনায় স্বাস্থ্যের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে : পরিবেশ মন্ত্রী    হিট ওয়েভে ঠিক থাকতে যা যা করণীয়    গাজায় গণহত্যায় নেতানিয়াহু আবির্ভূত হয়েছেন হিটলারের মতো : ওবায়দুল কাদের    আন্তর্জাতিক ইস্যুর কারণে ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে : বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী    ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি   
https://www.dailyvorerpata.com/ad/Inner Body.gif
শুরু হয়েছে তালের রস আহরণের মৌসুম
তালের রসের শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে চান গাছিরা
রস সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছে গাছিরা
নাজিরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৫ মে, ২০২২, ৬:০৮ পিএম | অনলাইন সংস্করণ

তালের রসের মৌসুম পুরাদমে শুরু হয়েছে। গাছিরা রস আহরণে তালগাছে ব্যস্ত দিন পার করছে। তালের রস সুমিষ্ট ও পাটালি গুড় সবার কাছে মুখ-রোচক। এ কারণে তালের রস ও গুড়ে কদোর রয়েছে সবার কাছে।

নাজিরপুর উপজেলার ৯টি ইউনিয়েনে প্রতিটি গ্রামে কম বেশি তাল গাছের রস আহরণে গাছিরা সারাদিন ব্যস্ত সময় পার করছে। ফালগুনের শেষ ও চৈত্র মাসের প্রথম থেকে তালের রস আহরণের জন্য গাছিরা তাল গাছ পরিচর্যা শুরু করে। চৈত্রের ১৫ থেকে জ্যৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত তালের রস আহরণ চলবে। তালগাছে উঠার জন্য সোজা শক্ত বাঁশের প্রয়োজন হয়। গাছ ছোট-বড় হিসাবে বাঁশের প্রয়োজন হয়। বাঁশের প্রতিটি গিরার কুি  ৬/৮ ইি  রেখে বাকিটা কেঁটে রাখা হয়। বাঁশের গিরার এই কুি  সিঁড়ি হিসাবে বেয়ে ওঠা নামা করতে হয়। তালগাছ ২ প্রকারের ফল ও জটা। এ ২ ধরণের রস আহরণ করা যায়। তালের জট ও ফলের কাধির  মুচা ৬ ইি  মতো বের হলে রস আহরণের জন্য কাঁটা আহরণ শুরু করতে হয়। প্রতিটি গাছে ৬টি কাধি বা  মুচা রেখে বাকি গুলো কেঁটে রাখা হয়। জটা তাল গাছের জটার মুচার সারিগুলো শক্তভাবে বেঁধে রাখা হয়। জট বা কাঁধির শেষ প্রান্ত থেকে ধারালো দা দিয়ে পাতলা করে কাঁটা শুরু করা হয়। কয়েকদিন কাঁটার পর রসের পরিমাণ বাড়লে রস আহরণ শুরু হয়। রস আহরণের জন্য প্রতিটি গাছে ১২টি ঘট প্রয়োজন হয়। প্রতিদিন ৩ বার গাছের মুচা বা কাধি পাতলা করে কেঁটে রস আহরণ করা হয়। সকালে ও বিকালের রস গাছ থেকে নামানো হয়। আর দুপুর বেলায় শুধু মুচা বা কাধি পাতলা করে কাঁটা হয়। প্রতিটি গাছে ২ থেকে ৩ ভাড় রস হয়।



এ ব্যাপারে উপজেলার লক্ষীদিয়া গ্রামের মো. ইউসুব আলী শেখ জানান, তিনি প্রায় ২৫ বছর যাবৎ তালগাছের রস আহরণ করে আসছে। কৃষি কাজের পাশাপাশি তিনি প্রতিবছর খেঁজুর ও তালের রস আহরণ করে। তিনি এলাকার মুরবিদের কাছ থেকে তালের রস বের করার কৌশল রপ্ত করেন।

তিনি জানান, তার দিনে প্রায় ২৫/৩০ ভাড় রস সংগ্রহ হয় এবং  প্রতি ভার রস ১০০টাকা বিক্রি করেন। প্রতি কেজি তালের পাটালি ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ৯ ভাড় রস জ্বালিয়ে ৭ কেজি গুড় তৈরি হয়। তিনি জানান, একটি তালগাছ থেকে মৌসুমে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব। তবে এখন আর কেউ তালের রস আহরণ করার জন্য এই কাজে আসতে চাই না। তালের রস আহরণে প্রায় সারা দিন তালগাছের জন্য ব্যয় করতে হয়। বাঁশ বেয়ে গাছে ওঠা নামা ও মাজায় বেঁধে ঘট ও রস নামানো খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। তাই এ কষ্টের কাজে গাছি কাজ করতে কেউ এগিয়ে আসছে না। নতুন করে গাছি তৈরি না হলে আগামীতে হয়তো এ এলাকায় তালের রস সংগ্রহ করা সম্ভব হবে না। 

তালগাছ প্রাকৃতিক দূর্যোগ রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তারপরও নির্বিচারে তালগাছ নিধন করায় এলাকা থেকে তালগাছ হারিয়ে যেতে বসেছে। তেমনি গাছির অভাবে তালগাছ থেকে রস বের করা সম্ভব হচ্ছে না। তালগাছ টিকিয়ে রাখতে ও তালের রস আহরণ করার জন্য সরকারী ভাবে গাছির প্রশিক্ষণ ও সরকারী ভাবে প্রদয়না দিলে অনেকেই হয়তো গাছির কাজ করতে আগ্রহী হবে। এ জন্য এলাকার গাছিরা কৃষি অধিদপ্তর ও সরকারের প্রতি তালের রস আহরণের শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে এই অর্থকারী খাতের প্রতি সুদৃষ্টি কামনা করেছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দিগ্বিজয় হাজরা জানান, তালের রস একটি পুষ্টি কর খাবার। গরমে এ রস পান করলে মানুষের মস্তিস্ক ঠান্ডা রাখে। তালগাছ প্রাকৃতিক দূর্যোগ রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রকৃতি-পরিবেশ ও পুষ্টির কথা ভেবে আমাদের বেশি করে তাল গাছ লাগানো উচিত।

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Vorer-pata-23-12-23.gif
http://www.dailyvorerpata.com/ad/bb.jpg
http://www.dailyvorerpata.com/ad/Screenshot_1.jpg
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


সম্পাদক ও প্রকাশক: ড. কাজী এরতেজা হাসান
সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
সাউথ ওয়েস্টার্ন মিডিয়া গ্রুপ


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম


©ডেইলি ভোরের পাতা ডটকম

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৯৩ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
ফোন:৮৮-০২-৪১০১০০৮৭, ৪১০১০০৮৬, বিজ্ঞাপন বিভাগ: ৪১০১০০৮৪, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৪১০১০০৮৫
অনলাইন ইমেইল: [email protected] বার্তা ইমেইল:[email protected] বিজ্ঞাপন ইমেইল:[email protected]