
এক সময়ের চা বিক্রেতা বাবার ৩ সন্তানের মধ্যে ছোট আঁখি রানী তালুকদার। আঁখি এবার মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। তিনি শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু পিতা হারা পরিবারের আর্থিক সংকটের কারনে আঁখির মেডিকেলে ভর্তির স্বপ্ন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
আঁখির বাবা রমেন্দ্র চন্দ্র তালুকদার তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট বাজারে একসময় চা বিক্রি করে সংসার ও ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার খরচ যোগাতেন। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতায় তিনি বছরখানেক পূর্বে মারা যান। আঁখির বাবা মারা যাওয়ার পর অসহায় সংসারের হাল ধরেন আঁখির মা মিনা রানী তালুকদার। ২ বোন আর এক ভাই মিলে তাদের সংসার। মেয়ের চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন পূরণে আঁখির মা সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
ছোটবেলা থেকেই লেখাপড়ায় আগ্রহী আঁখি রানী তালুকদার বলেন, 'আমি অনেক কষ্ট করে পড়াশোনা করেছি, এমনো সময় গেছে পেট ভরে দু'বেলা খেতে পারিনি। আমি অভাবের কারনে কোনো স্যারের কাছে প্রাইভেট পড়তে পারি নি । পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ এবং এসএসসি ও এইচএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে মেধা তালিকায় উত্তীর্ণ হয়েছি।'
তিনি আরও বলেন, 'আমি মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ, বগুড়ায় ভর্তির সুযোগ পেয়েছি। আমার ভাই বোন সহ মা অনেক খুশি হয়েছেন। আমার বাবা চা বিক্রি করে আমার পড়াশোনা ও সংসার চালাতেন, বাবা বেঁচে থাকলে আরো বেশি খুশি হতেন, কিন্তু, বর্তমানে আমি মেডিকেলে ভর্তি নিয়ে অনিশ্চয়তায় আছি।'
আঁখির মা মিনা রানী তালুকদার বলেন, স্বামী হারা সংসারে অভাব অনটনের ভেতরে আমাকে সংসারের হাল ধরতে হয়েছে। আমার ছেলেমেয়েগুলো অভাব-অনটন ও দুঃখ-কষ্টের মধ্যে বড় হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, 'আমার মেয়ে বগুড়ায় মেডিকেলে চান্স পেয়েছে। কিন্তু, তাকে ভর্তি করার মতো টাকা-পয়সা আমার নেই। কীভাবে মেয়েকে ভর্তি করাব সেই চিন্তায় আছি।'
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাহায্য কামনা করে মিনা রানী তালুকদার বলেন, 'আমার মেয়ের মেডিকেলে ভর্তি করাতে মানবতার মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করছি। প্রধানমন্ত্রী যদি যদি সাহায্য করেন তাহলে মেয়েটাকে ডাক্তারি পড়াতে পারব। তা না হলে আমার কোনো ক্ষমতা নেই তাকে পড়ানোর।
এ ছাড়া, তিনি সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার অনুরোধ করেছেন।
আঁখি রানীকে সহযোগিতা করতে চাইলে আঁখি রানী তালুকদার, সঞ্চয়ী হিসাব নং -5911301028277, সোনালী ব্যাংক লি. তাহিরপুর শাখা,সুনামগঞ্জ এ সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ করা হলো।
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুনা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল বলেন, আঁখির বাবা একজন চা বিক্রেতা ছিলেন, তিনি মারা যাওয়ার পর সংসারের হাল ধরেন আঁখির মা মিনা রানী তালুকদার। দারিদ্র্যতা জয় করে আঁখি এবার মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে এ জন্য আমরা তাহিরপুর উপজেলাবাসী আনন্দিত। আমি ব্যাক্তিগত ভাবে আঁখিকে সহযোগিতা করেছি এবং সবসময় সহযোগিতা করার চেষ্টা করবো। এ সময় তিনি আঁখির পাশে দাড়ানোর জন্য সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেন।