ফেনসিডিলসহ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় তিন নেতা আটক, অতপর...
ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলা ছাত্রলীগের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে ঢাকা থেকে সেখানে যাওয়ার পথে ফেনসিডিলসহ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের তিন নেতা আটক হওয়ার পর তাদেরকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার ভোরে জেলার বিজয়নগর থানার পুলিশ তাদের আটক করে থানায় নিয়ে গেলেও মাত্র দেড় ঘন্টার মধ্যে ছেড়ে দেয়া হয়। এমনকি এলিয়েন গাড়ির চালককে আসামি করে মামলা দেয়ার পর অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাদের সেই মামলার সাক্ষী করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে বিজয়নগর থানার এস আই সাহেদুল হক।
তিনি আরো বলেন, গাড়িতে তিনজন যাত্রী ছিলেন। চালকের আসনের নিচ থেকে ৬ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করার পর বৃহস্পতিবার সকালে তাদের থানায় নিয়ে যাই। এ ঘটনায় একটি মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
গাড়িতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কোন কোন নেতা উপস্থিত ছিলেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে সরাসরি কোনো উত্তর দেননি সাহেদুল হক। তিনি বলেন, আমি সারারাত ডিউটি করে এসেছি। এখন কারা উপস্থিত ছিল তা সঠিকভাবে বলতে পারবো না।
তবে, বিজয়নগর থানার অপর একজন পুলিশ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ভোরে ২০ বোতল ফেনসিডিলসহ গাড়িটি আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। তারপর সেখানে তাদের ছাড়িয়ে নিতে ছুটে আসেন বিজয়নগর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি এস এম মাহবুব হোসেন। থানায় আটক করাদের মধ্যে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ সভাপতি জিয়াসমিন শান্তা, সহ সভাপতি এম সাজ্জাদ হোসেন এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জাব্বার রাজ ছিলেন বলে বিজয়নগর থানা সূত্র নিশ্চিত করেছে।
থানায় উপস্থিত হয়ে বিজয়নগর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি এস এম মাহবুব হোসেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতাদের ছাড়তে পুলিশের ওপর চাপ প্রয়োগ করেন। উল্লেখ্য, নারী ও শিশু নির্যাতন মামলার আসামি হিসাবে মাত্র ১০ দিন আগে জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন এস এম মাহবুব।
এ বিষয়ে বিজয়নগর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি এস এম মাহবুব হোসেনকে ফোন করা হলেও তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
এদিকে, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা মাদকসহ গাড়িতে আটক হওয়ার পর থেকেই সমালোচনা শুরু হয়েছে। তাদের বহিস্কারের দাবিও করেছেন। উল্লেখ্য, সহ সভাপতি জিয়াসমিন শান্তা ছাত্রলীগের রোকেয়া হলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফাল্গুনী দাস তন্বীকে মারধরের ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামি। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জাব্বার রাজ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টচার্যের নামে কমিটি বিক্রির মূল হোতা হিসাবে চিহ্নিত।
বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মির্জা মোহাম্মদ হোসেন ভোরের পাতাকে বলেন, চারজনকে এস আই সাহেদুল হক মাদকসহ আটক করেছিল। তাদের মধ্যে চালকের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে বাকিদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তবে তাদের পরিচয় আমি জানি না, তারা ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা কিনা, সেটাও জানি না।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়কে ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।