অধ্যাপক ডা. এস এম মোস্তফা জামান
প্রকাশ: শুক্রবার, ৪ মার্চ, ২০২২, ২:৪৮ এএম | অনলাইন সংস্করণ
সকাল সন্ধ্যা কেটে যায় হাসপাতালে।হাসপাতালই এখন আমার ঘর আমার বেহেশত। বছরের পর বছর কত মানুষের সুখ দুঃখের সাথী। বুকে ব্যথা …হার্ট অ্যাটাক কত শত রোগ.. হাসপাতালের বেডে শুয়ে থাকা প্রতিটি রোগীর সাথে মায়া মমতায় ঘিরে থাকে তাদের আপনজন। কখনো উদ্বেগ -আতংক -ভয় কখনো হাসি মুখ।
উৎসবের দিন গুলোতে ও কেউ কেউ হাসপাতালে থাকতে বাধ্য হয়। আবার কখনো কখনো ডাক্তার হিসেবে প্রতিদিনের রুটিন কাজের ফাঁকে আমরা ও স্পন্দিত হই রোগীর ভালোবাসায়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের হৃদরোগ বিভাগে কাজ শেষে যখন বাড়ী ফেরার পালা। একজন রোগীর মেয়ে ছোট্ট একটি চিরকূট আর মিষ্টির বাক্স হাতে দিয়ে বললো, স্যার আজ আমার মা বাবার ৫০তম বিবাহ বার্ষিকী। এই দিনটি আনন্দময় হয়েছে আপনার জন্য। গতকালই তার মায়ের হার্টের রক্তনালীতে চারটি রিং (Stent) বসিয়েছি। আজ তার মুখে হাসি। গত সপ্তাহেই মেয়েটির বাবাও হৃদরোগ নিয়ে পাশের বেডেই ভর্তি ছিলো। এখন সুস্হ হয়ে বাসায় আছেন। হাসপাতালে কাজ করতে আমার খুব ভালো লাগে।
মাঝে মাঝে আমার হাতের কারসাজিতে -রংবাজিতে আমি নিজেই তাজ্জব হই। হৃৎপিন্ডের বন্ধ হয়ে যাওয়া রক্তনালী খুলে দিলে চলে অবাধ রক্তের প্রবাহ।
এ যেন ভালোবাসার বিচ্ছুরণ।রৌদ্র-জ্যোৎস্না আর হাওয়ায় স্পন্দিত।
চিরকূটের লেখা পড়ে আমার চোখ ভিজে আসে। আমিও আমার ভায়োলেট ইউনিটের পক্ষ থেকে জানিয়ে দিই হ্যাপি এ্যানিভার্সারি ফুলেল শুভেচ্ছা। কবি শামসুর রাহমানের মতো আমারো বলতে ইচ্ছে হয় আজ “হৃদয়ে আমার পৃথিবীর আলো।”
(লেখাটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে হৃদরোগ বিভাগের অধ্যাপক ডা. এস এম মোস্তফা জামানের ফেসবুক প্রোফাইল থেকে সংগ্রহীত)