আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, পলায়নপর রাজনীতি যারা করেন, মুখোশের আড়ালে তারাই গণতন্ত্রের শত্রু। তারাই ভোটাধিকারের শত্রু, উন্নয়নের শত্রু। আসলে বিএনপি নেতারা জনগণের জন্য কখনও রাজনীতি করেননি, এখনও না। তাদের রাজনীতি লুটপাটের।
বুধবার (১৩ অক্টোবর) রাজধানীর ডেমরায় যাত্রাবাড়ী-ডেমরা মহাসড়ক ৪-লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্প উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি যে নীতি গ্রহণ করেছে, তা দলটির জন্য আত্মঘাতী হবে। এটি ভোটারদের সঙ্গে প্রবঞ্চনা ছাড়া আর কিছু নয়।
আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘মির্জা ফখরুলকে মনে করিয়ে দিতে চাই, ২০০৮ সালে বিএনপি বলেছিল আওয়ামী লীগ ৩০টি আসনও পাবে না। পরে দেখা গেলো তাদেরই ৩০টি আসন পেতে কষ্ট। এখনও বলছে আওয়ামী লীগ কিনা ৩০টি আসনও পাবে না। আগেভাগে তাদের এই সংখ্যা তত্ত্বের হিসাব হাস্যকর।
তিনি বলেন, আমরা সংখ্যা তত্ত্বের হিসাবে বিশ্বাসী নয়। ব্যালটের মাধ্যমে জনগণ নেতৃত্ব নির্বাচন করবে। জনগণের রায় যেটাই হোক সেটা মেনে নেওয়ার সৎ সাহস শেখ হাসিনার আছে। কিন্তু যারা নিজেদের আকাশসম জনপ্রিয়তার দিবাস্বপ্ন দেখেন তারা কেন নির্বাচনকে ভয় পান।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রকাশ্যে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার কথা বললেও প্রতীক ছাড়া তারা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। তলে তলে নিচ্ছেন, ওপরে কোনও প্রতিক্রিয়া নেই। প্রতীক ছাড়া নির্বাচন করছেন। কেন তাদের প্রকাশ্যে নির্বাচন করতে এতো ভয়। নির্বাচনে দিনে-দুপুরে তারা পালিয়ে যায়, এখনও যান।
এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যার নেতৃত্বে বিএনপি চলছে তিনি একজন পলাতক আসামি। সবচেয়ে বড় কথা হলো, তিনি মুচলেকা দিয়ে রাজনীতি করবেন না বলে লন্ডনে চলে গিয়েছিলেন। আর ফিরে আসেননি। কাজেই পালানোর অভ্যাসটি তাদেরই। তাদের নেতাই তো পলাতক।
এ সময় নির্বাচন কমিশন আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে আরও তিন ধাপে সারাদেশে তিন হাজারের অধিক ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে গঠনতন্ত্র মোতাবেক দলের সব ইউনিয়ন শাখাকে ১৬ অক্টোবর থেকে রেজুলেশন প্রস্তুত করতে সভা ডাকার নির্দেশনা দেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি শেষ মুহূর্তে রেজুলেশন প্রস্তুত করার কারণে অনেক জায়গায় সাংগঠনিক নীতি অনুসরণ করা হয় না। আবার শেষ মুহূর্তে একসঙ্গে সব রেজুলেশন নিয়ে কাজ করার একটি দুরূহ বিষয়। দ্বিতীয় ধাপে বিতর্কিত কোনও ব্যক্তি মনোনয়ন পেলে সেই বিষয়ে সুস্পষ্ট অভিযোগ পাওয়া মাত্রই আওয়ামী লীগ খতিয়ে দেখছে। প্রয়োজন হলে সংশোধনের উদ্যোগ নিচ্ছি।
এর আগে যাত্রাবাড়ী-ডেমরা মহাসড়ক ৪-লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পর উদ্বোধন করেন তিনি। ওবায়দুল কাদের জানান, প্রায় ৩৬৯ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সার্ভিস লেনসহ প্রায় সাড়ে ৫ কিলোমিটার, মহাসড়ক ৪-লেনে উন্নীত করা হচ্ছে এবং দুই পাশে সার্ভিস লেনও নির্মাণ করা হচ্ছে। এ ছাড়াও প্রকল্পের আওতায় ১১টি আন্ডারপাস, প্রায় ২৬ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি সেতু ও ১টি ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি শতকরা ৬০ ভাগ। আগামী বছরের জুন মাসের মধ্যে প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ শেষ হবে বলে জানান মন্ত্রী।