পঞ্চগড়ে জমি দখলের চেস্টায় উপর দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা ও অগ্নিসংযোগের স্বীকার হয়েছে একটি পরিবার। চারদিন ধরে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে জেলার সদর উপজেলার পঞ্চগড় সদর ইউনিয়নের ডুডুমারি মাহানপাড়া গ্রামে।
ফরহাদ ফেরদৌস (২৯) নামে এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী (পান দোকানদার) তিন বছর ধরে ওই গ্রামে পৈত্রিক সুত্রে পাওয়া জমিতে বসবাস করে আসছে। সম্প্রতি নিজের জমি দাবি করে একই গ্রামের আল মামুন ও হাফিজুল ইসলাম দলবল নিয়ে তার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর ও মারপিট করে। এরপর থেকে দরিদ্র ভুক্তভোগী ওই পরিবারটি খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন কারছে।
এ ঘটনায় ফরহাদ ফেরদৌস বাদি হয়ে গতকাল রবিবার (১ আগষ্ট) পঞ্চগড় সদর থানায় আল মামুন ও হাফিজুল ইসলামসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। তবে পুলিশ এখন পর্যন্ত কোন আসামীকেই গ্রেফতার করতে পারেনি।
মামলার এজাহার ও সরেজমিন গিয়ে জানা গেছে, ফরহাদ ফেরদেীস পৈতৃক ১ বিঘা জমিতে চাষাবাদ করে ভোগদখল করে আসছে। ওই জমি নিয়ে আল মামুন ও হাফিজুলের সঙ্গে ফরহাদের বিবাদ চলছিল। এ নিয়ে আদালতে মামলাও চলছে। চলতি বছরের ৩ জুলাই আল-মামুন ও হাফিজুল ইসলামসহ তাদের লোকজন ওই জমি দখল করতে আসে। এসময় ফরহাদের মা ফয়জান নেছা ও স্ত্রী শাহিনা বাঁধা দিলে আসামীরা তাদের মারপিট করে। মারপটি ও হত্যার চেষ্টার ঘটনায় ৬ জুলাই পঞ্চগড় সদর থানায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। ১৫ জুলাই আসামীরা জামিনে মুক্তি পেয়ে পরদিন ১৬ জুলাই মামলা তুলে নিতে ফরহাদকে হুমকি দেয়। পরদিন আবারও ফরহাদ ফেরদৌস জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে আল মামুন, হাফিজুল, জমিরুল ইসলামের নামে একটি সাধারণ ডাইরী করেন এবং আসামীদের বিরুদ্ধে ১৪৪ ধারা জারি করে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে গত শুক্রবার আসামীরা দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ফরদাদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর, লুটপাট করে। এসময় ফরহাদের মা ফয়জান ও স্ত্রী শাহিনা বাঁধা দিলে আসামীরা তাদেরকেও মারপিট করে। পরে স্থানীয়রা পঞ্চগড় ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
ভুক্তভোগী ফরহাস ফেরদৌস জানান, আসামীরা বারবার জোরপূর্বক আমার জমি দখলে নিতে চায়। তারা কয়েক দিন পর পর আমার জমি দখল করতে আসে মারপিট করে হুমকি দেয়। আসামীরা আমার তিনটি ঘরে আগুন দেয়। এতে নগদ টাকা, শুকনো মরিচ, পাট, আসবাবপত্রসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সম্পুর্ণ পুড়ে যায়। আমি নিরুপায় হয়ে এখন খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছি। আমার ঘর বাড়িতে আগুন, ভাংচুর ও আমার মা এবং স্ত্রীকে মারপিটের বিচাই চাই।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আল মামুনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর ও মারপিটের অভিযোগ অস্বীকার করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পঞ্চগড় সদর থানার উপ-পরিদর্শক মো. কাইয়ুম আলী জানান, মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্তে আসামীরা দোষী সাব্যস্ত হলে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। ন্যায় বিচারের স্বার্থে অধিকতর তদন্ত করা হচ্ছে যাতে প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা যায়।
পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল লতিফ মিয়া জানানা বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর ও মারপিটের ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে। মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। দ্রুতই তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।