প্রকাশ: বুধবার, ৭ এপ্রিল, ২০২১, ১০:১৫ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
বাংলাদেশে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বন্ধুরাষ্ট্র ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনের প্রতিবাদের নামে দেশে সহিংস তাণ্ডব চালিয়েছে হেফাজতে ইসলাম। আসলে হেফাজত মৌলবাদীদেরই আরেকটি রূপ। এরা ধর্মান্ধ মৌলবাদী শক্তি জামাতেরই একটি ভিন্ন রূপ। জামায়াতে ইসলামী ও হেফাজত ইসলাম, এরা একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। দেশব্যাপী হেফাজতের তাণ্ডবের যে আস্ফালন সেটা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তারা ইসলামের নাম দিয়ে দেশে উগ্রবাদিতা ছড়াচ্ছে।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ৩০২তম পর্বে বুধবার (৭ এপ্রিল) আলোচক হিসেবে উপস্থিত হয়ে এসব কথা বলেন- ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়ার সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ হারুন-উর-রশিদ আসকারী অধ্যাপক ড. মোঃ হারুন-উর-রশিদ আসকারী, ব্যারিস্টার, লিংকনস ইন লন্ডন (পাবলিক একসেস) ১২ ওল্ড স্কয়ার চেম্বার, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা চৌধুরী হাফিজুর রহমান, ইতালি আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতিয়ার রসুল কিটন। দৈনিক ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভোরের পাতার সিনিয়র রিপোর্টার উৎপল দাস।
আতিয়ার রসুল কিটন বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে হেফাজতের নেতৃত্বে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ধ্বংসলীলা সংগঠিত হয়েছে। ২০১৬ সালের আগেও এখানে হেফাজত এবং স্থানীয় একটি মৌলবাদী গোষ্ঠী আন্দোলন সংগ্রামের নামে রেললাইন, রেলস্টেশন এবং কিছু স্থানে আক্রমণ করেছিল। এখন দেশে একদিকে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরকে কেন্দ্র করে ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর সন্ত্রাস। অন্যদিকে প্রাণঘাতী করোনা বাড়াচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে ভারতের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফর নিয়ে দেশব্যাপী হেফাজতের তাণ্ডব রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তারা এটা করার সুযোগ ও সাহস কোথায় পেল? জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতাই বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগের পরিচয়। আর ধর্মান্ধ মৌলবাদী যে কোনো সংগঠন বা গোষ্ঠীই হলো প্রগতির বিরুদ্ধে, গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে, অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিরুদ্ধে। এরা কখনো কোনো দিন আওয়ামী লীগের বন্ধু হতে পারে না। এর আগে ২০১৩ সালে হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডব দেখেছি। দেশকে মুক্তিযুদ্ধের মূলনীতির আলোকে সোনার বাংলা গড়ার সকল প্রচেষ্টা মলিন করে দিতে এই হেফাজত ইসলামই যথেষ্ট। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনকে কেন্দ্র করে হেফাজতে ইসলামও ২৬ মার্চে স্বাধীনতা দিবসে ভারত বিরোধিতার নানা স্লোগান নিয়ে মাঠে নামে। চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা হাটহাজারী থানা, ভূমি অফিস আক্রমণ করে, খাগড়াছড়ি সড়কের মাঝখানের দেয়াল তুলে অবরোধ করে। সেখানে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাধে। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটে। ঢাকাতেও হেফাজত, বিভিন্ন বাম ছাত্র সংগঠন এবং আরও কিছু ব্যক্তি ও গোষ্ঠী বায়তুল মোকাররম, শাপলা চত্বরসহ বেশ কটি জায়গায় সংঘাতে লিপ্ত হয়। ইসলাম শান্তির ধর্ম। এটি অতীব সত্য কথা। সব ধর্মই মানুষকে শান্তির বাণী প্রচার করতে বলে। ইসলামও তাই করে আসছে। কিন্তু যে মানুষ দৈনন্দিন নানা ধরনের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ের সঙ্গে জড়িত থাকে, বিভিন্ন ধরনের সংগঠন কিংবা সংস্থার মধ্যে কাজ করে তারা কতখানি তাদের ধর্মের পবিত্র বাণী ধারণ ও চর্চা করার ক্ষেত্রে মনোযোগী থাকেন। কিন্তু তারা এই ইসলামের নাম দিয়ে উগ্রবাদিতা ছড়াচ্ছে।