প্রকাশ: রোববার, ৪ এপ্রিল, ২০২১, ১০:০৩ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
আমরা একই সময়ে আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তীর সন্ধিক্ষণ অতিক্রম করেছি এবং এই সময়টাতেই আমরা সেই সাম্প্রদায়িক শক্তির আস্ফালন দেখতে পেলাম। আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে সপরিবারে হত্যা করার পর যে স্বৈরাচারী সরকার তখন ক্ষমতায় এসে তারা এই উগ্র মৌলবাদীদের রাজনীতি করার সুযোগ করে দেয়। যে সব জায়গা থেকে এই সকল উগ্র মৌলবাদী ব্যক্তিরা জন্ম হচ্ছে বা তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে সেসব জায়গা চিহ্নিত করে তাদেরকে সমূলে নিধন করতে হবে।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ২৯৯তম পর্বে রোববার আলোচক হিসেবে উপস্থিত হয়ে এসব কথা বলেন- ইসলমী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়ার ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহিনূর রহমান, বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ভিক্ষু সুনন্দপ্রিয়। দৈনিক ভোরের পাতা সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভোরের পাতার সিনিয়র রিপোর্টার উৎপল দাস।
ভিক্ষু সুনন্দপ্রিয় বলেন, আমরা যদি ইতিহাসের দিকে তাকায় তাহলে আমরা বুঝতে পারবো উগ্রতা এবং ধর্মীয় মৌলবাদ কিভাবে সৃষ্টি হয়েছে, কেন সৃষ্টি হয়েছে এবং কেন বার বার এটা মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে। আমরা জানি যে, বাংলা ভাগ হয়েছে দ্বিজাতীয় তথ্যের ভিত্তিতে। সেখানেও কিন্তু ধর্মের প্রয়োগ করা হয়েছিল। তখন আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উপলদ্ধি করলেন কোন ধর্মের ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালিত হতে পারেনা। এরপর নানা পর্যায়ক্রম পার করে ১৯৭১ সালের তার নেতৃত্বে একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য মহান মুক্তিযুদ্ধ পরিচালিত হয় এবং তার নেতৃত্বে আমরা একটি মানচিত্র পায়, একটি পতাকা পায়। আমাদের দুর্ভাগ্য যে তখন আমরা তার নেতৃত্বে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে পারিনি কারণ আমরা অনেক ছোট ছিলাম তখন কিন্তু আমাদের এটাও সৌভাগ্য যে আমরা আমাদের জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী পালন করছি এবং একই সাথে আমাদের মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উৎযাপন করছি। এমনি সময়ে এই আধুনিক বাংলাদেশে এই ধর্মীয় উগ্রতা ও মৌলবাদীরা যে আস্ফালন দেখাচ্ছে; এটা কিন্তু আমাদের কাছে প্রশ্ন থেকে যায়। বঙ্গবন্ধুর যোগ্য উত্তরসূরি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকল ধর্মের লোকদের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য আমাদের জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় কর্মকাণ্ডকে যথাযোগ্য মর্যাদায় উন্নীত করেছেন। স্বাধীন দেশের ধর্মীয় উগ্রবাদ নির্মূলের সাফল্যও তার সরকারের বড় অবদান। বাংলাদেশকে সব ধর্মের সব মানুষের জন্য শান্তির দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে বঙ্গবন্ধু ছিলেন সদা সচেষ্ট। বঙ্গবন্ধুর স্বল্পকালীন শাসনামলে দেশ ও জাতির সার্বিক কল্যাণার্থে গৃহীত প্রতিটি পদক্ষেপ ছিলো মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধর্মীয় অনুভূতি ও মূল্যবোধের অনুগামী। আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে সপরিবারে হত্যা করার পর যে স্বৈরাচারী সরকার তখন ক্ষমতায় আসলো তখন তারা এই উগ্র মৌলবাদীদের রাজনীতি করার সুযোগ করে দেয়। বাংলাদেশে এই মুহূর্তে করোনাভাইরাস মহামারির পর সবচেয়ে বড় সংকট সম্ভবত ধর্মকে ঘিরে রাজনৈতিক অস্থিরতা। বাংলাদেশে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বন্ধুরাষ্ট্র ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনের প্রতিবাদের নামে দেশে সহিংস তাণ্ডব চালিয়েছে এই রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি করেছে হেফাজতে ইসলাম।