কিছু দিন যাবৎ বিশ্বনবী রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলােইহি ওয়া সাল্লাম অসুস্থ। ওফাতের কয়েকদিন আগের ঘটনা। এমনই সময়ে বাবাকে দেখতে হাজির হয়েছেন মেয়ে ফাতিমা। আসার পর বাবা ও মেয়ের মাঝে কিছু বিষয়ে কথপোকথন হয়।
কথপোকথনের এক পর্যায়ে হজরত ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু আনহা প্রথমে কেঁদে ফেললেন। আবার কিছুক্ষণ পর হাসি দেন। হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।
ঘটনাস্থলে আয়েশা উপস্থিত থাকলেও তাদের মধ্যকার কোনো কথা তিনি শুনেননি। হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা হাসি ও কান্নার ঘটনা জিজ্ঞাসা করা সত্ত্বেও হযরত ফাতেমা তা বলেননি।
হজরত ফাতেমা বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ইন্তেকালের পর পুনরায় হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহার জিজ্ঞাসাবাদে প্রকাশ করেন। হাদিসটি তুলে ধরা হলো-
হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, ফাতেমা পায়ে হেটে আগমন করে। তার হাটা যেন প্রিয়নবীর হাটার মতোই। তখন নবী (সা.) বলেন, ‘শুভাগমন হে আমার মেয়ে! অতঃপর নবী (সা.) তাঁকে তার ডান অথবা বাম পাশে বসিয়ে গোপনে কিছু কথা বললেন, (যা শুনে) ফাতেমা কেঁদে ফেলে।
আমি তাকে বললাম কাঁদছ কেন?
এরপর প্রিয়নবী তার সঙ্গে গোপনে কিছু কথা বললেন (যা শুনে) ফাতেমা হেসে ফেলে।
আমি বললাম, আজকের মতো (হজরত ফাতেমার) আনন্দ ও দুঃখ কোনো দিন দেখিনি। তাই প্রিয়নবি তাকে কি বললেন, সে বিষয়ে জিজ্ঞাসা করি। তখন ফাতেমা বললেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের গোপন রহস্য (এখন) প্রকাশ করব না।’
এরপর যখন প্রিয়নবী (সা.) এর ইন্তেকাল করলেন, তখন আমি ফাতেমাকে জিজ্ঞাসা করলে ফাতেমা বলেন, রাসুল (সা.) গোপনে আমাকে বলেন, ‘জিবরিল প্রতি বছর আমার নিকট কুরআন একবার করে পেশ করতেন। আর এ বছর দুইবার পেশ করেছেন।
আমার মনে হয়, মৃত্যুর সময় ঘনিয়ে এসেছে। আর আমার পরিবারের মধ্যে সর্বপ্রথম তুমিই আমার সঙ্গে মিলিত হবে। এ কথা শুনে আমি কান্না করি।
অতঃপর তিনি (বিশ্বনবি) বলেন, ‘আচ্ছা! তুমি এ কথায় সন্তুষ্ট নও যে, জান্নাতী নারী বা মুমিনা নারীদের সর্দারাণী হবে তুমি। তখন আমি হাসি।’ (বুখারি ও মুসলিম)
যদিও হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা ছিল বিশ্বনবির প্রিয়তম স্ত্রী; তথাপিও হজরত ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু আনহা ছিলেন বিশ্বনবির পরিবারের সদস্য (আহলে বাইত)। তাঁর প্রতি বিশ্বনবির ভালবাসা ছিল অত্যাধিক।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে বিশ্বনবির ভালবাসার নমুনায় আমরাও আহলে বাইতকে ভালবাসবো। তাঁদের যথাযথ সম্মান ও মর্যাদা প্রদান করব। আল্লাহ তাআলা উম্মাতে মুহাম্মাদিকে আহলে বাইতকে ভালবাসার তাওফিক দান করুন। আমিন।
ভোরের পাতা/এএম