প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৪ মার্চ, ২০২১, ৬:৫৬ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে মমতাজ বেগমের (৩৫) মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু। সবকিছু হারিয়ে তিনি এখন নিঃস্ব। গত ২২ দিন ধরে স্বামী ও অবুঝ দুটি সন্তান নিয়ে খোলা আকাশের নিচে তিনি আহাজারি করছেন। কিন্তু অদ্যাবধি তাদের পাশে সেভাবে কেউ দাড়ায়নি।
গত ১১ ফেব্রুয়ারী তারিখ রাত সাড়ে ৮ টার দিকে গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের ছাহের মন্ডল পাড়ায় রান্নাঘরের চুলো হতে অগ্নিকান্ডের এ ঘটনাটি ঘটে বলে জানা গেছে।
মমতাজ বেগম ওই গ্রামের দরিদ্র রিক্সাচালক আলমাস শেখের স্ত্রী।আগুনে তার থাকার ২ টি ছাপড়া ঘর,১ টি রান্না ঘর, ৪ টি ছাগল,এনজিও আশা নেয়া ঋনের ৫০হাজারটাকা,
ধান,চাল,স্বামী -স্ত্রীর জাতীয়পরিচয়পত্র, বাচ্চাদের জন্ম নিবন্ধন সনদ, কাপড়-চোপর ও গাছপালা ভস্ম হয়ে যায়। স্থানীয়রা গোয়ালন্দ ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। কিন্তু ফায়ার সার্ভিসের লোকজন ঘটনাস্হলে আসলেও সরু রাস্তার কারনে জামতলা হাইস্কুলের পাশ দিয়ে মমতাজের বাড়ীতে যেতে পারেনি।
খবর পেয়ে স্থানীয় পুরুষ ও মহিলা ইউপি সদস্য এসে মমতাজকে ৫শ টাকা করে সাহায্য করে যান।ইউপি চেয়ারম্যান আসেননি।তবে ১০ কেজি চালসহ কিছু ত্রান সামগ্রী পাঠিয়ে দেন।
৪ মার্চ বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ৫ শতকের শূন্য ভিটেতে দুটো সন্তান নিয়ে কান্নাকাটি করছেন মমতাজ।স্বামী ফরিদপুর শহরে রিক্সা চালান।আশপাশের লোকজন যে যা দেয় তাই খেয়ে অতি কষ্টে তাদের দিনরাত কাটছে।রাতে পাশের একটি বাড়ির রান্নাঘরে গিয়ে সন্তান দুটিকে নিয়ে ঘুমান।
এ সময় তিনি কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, এক বছর আগে অনেক ধারদেনা করে বড় মেয়েটিকে বিয়ে দেই। কোনভাবেই দেনা পরিশোধ করতে পারছিলাম না।তাই পাওনাদারদের চাপে আগুন লাগার আগেরদিন আশা এনজিও হতে ৫০ হাজার টাকা ঋন নেই।কাউকে একটি টাকাও দিতে পারিনি।এরমধ্যেই সবশেষ হয়ে গেল।এখন আমাদের কি হবে, কিভাবেই বা এত টাকা শোধ দেব।
এ প্রসঙ্গে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আমিনুল ইসলাম বলেন, অগ্নিকান্ডের বিষয়ে আমাকে কেউ কিছু জানায়নি।তবে খোঁজ নিয়ে ওই অসহায় পরিবারটির জন্য সম্ভাব্য সব কিছুই করার চেষ্টা করবো।