শিরোনাম: |
অদৃশ্য চাপে নতজানু ‘বেঈমান’ শিষ্য একরাম চৌধুরী!
উৎপল দাস
|
![]() অদৃশ্য চাপে নতজানু ‘বেঈমান’ শিষ্য একরাম চৌধুরী! ভোরের পাতার অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে কেন ওবায়দুল কাদের এবং তার একসময়ের অনুগত শিষ্য একরাম চৌধুরীর মধ্যে বিরোধিতার নেপথ্যের কারণগুলো। একরাম চৌধুরীর সীমাহীন দুর্নীতি, টেন্ডারবাজি, জেলা আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করার পাঁয়তারা করাসহ নানা বিষয় নিয়ে ভোরের পাতার ধারাবাহিক প্রতিবেদনের আজ থাকছে দ্বিতীয় পর্ব। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের পরিবারকে ‘রাজাকারের পরিবার’ বলে বিষোদ্গার করার পর এবার তাকে বীর মুক্তিযোদ্ধা বললেন নোয়াখালী-৪ (সদর-সুবর্ণচর উপজেলা) আসনের সরকারদলীয় সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী।শুক্রবার তিনি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডি থেকে লাইভে এসে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘নিউজ মিডিয়া বিভ্রান্তি ছড়াবেন না কেউ, ওবায়দুল কাদের সাহেব না শুধুমাত্র মির্জাকে বুঝিয়ে গতরাতে ফেসবুকে পোস্ট করছি, আমার গালে জুতা মারার মিছিল করালো সে। আমি ১৮ বছর ধরে নোয়াখালী আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী করে যাচ্ছি দলীয়ও প্রধান ও ওবায়দুল কাদেরের দিক-নির্দেশনায়, নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমি, মির্জা আমার জন্য জুতা মিছিল করায়, আমি জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী অঙ্গসংগঠনের নেতা কর্মীদের নির্দেশ দিচ্ছি মির্জার বিরুদ্ধে রাজপথে আর কোনো বিক্ষোভ প্রতিবাদ করার দরকার নাই, সে এমন কোন ফ্যাক্ট না তার বিরুদ্ধে ফাইটে নামতে হবে, জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন ও অর্জনের সুনাম ধরে রাখতে হবে। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ওবায়দুল কাদের, তার প্রতি আমি এবং আমাদের শ্রদ্ধা আজীবন হৃদয় থেকে থাকবে, নোয়াখালী আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আমরা সবাই জননেত্রী শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরকে ভালোবাসি সুতরাং কোনো ঠেলাঠেলি নয় সংগঠনকে গতিশীল করতে কাজ করুন সবাই। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।’ এরআগে বৃহস্পতিবার রাতে তিনি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডি থেকে লাইভে এসে ওবায়দুল কাদেরের পরিবারকে ‘রাজাকারের পরিবার’ বলেন। ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তা সারাদেশেই আলোচনার জন্ম দেয়। ওইদিন রাত ১২টা ১০ মিনিটে ফেসবুক লাইভে এসে একরামুল করিম চৌধুরী বলেন, ‘দেশের মানুষ, স্লামালাইকুম। আমি কথা বললে তো মির্জা কাদেরের বিরুদ্ধে কথা বলব না, আমি কথা বলব ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে। একটা রাজাকার ফ্যামিলির লোক এই পর্যায়ে এসেছে, তিনি তার ভাইকে শাসন করতে পারে না। এগুলো নিয়ে আমি আগামী কয়েক দিনের মধ্যে কথা বলব। কয়েক দিনের মধ্যে যদি আমার জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি না আসে (ঘোষণা না করা হয়) তাহলে আমি এটা নিয়ে শুরু করব।’ কিছুক্ষণ পরই তিনি তার ফেসবুক আইডি থেকে ২৭ সেকেন্ডের লাইভ ভিডিওটি সরিয়ে নেন। তবে এর আগেই কয়েক মিনিটের মধ্যে ভিডিও বক্তব্যটি ভাইরাল হয়ে যায়। এ ঘটনায় ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই বসুরহাটের পৌর মেয়র আবদুল কাদের মির্জা একরামুলের বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানান। এদিকে, নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতারা ভোরের পাতাকে বলেছেন, একরাম চৌধুরী সম্পর্কে নতুন করে কিছু বলার নাই। তার মতো বেঈমান শিষ্য ওবায়দুল কাদের দ্বিতীয় কাউকে বানাতে পারবেন না। যে ওবায়দুল কাদেরের নাম ভাঙিয়ে আজকে হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন এই একরাম চৌধুরী, তার যদি নূন্যতম কৃতজ্ঞতাবোধ থাকতো তাহলে ওবায়দুল কাদের এবং তার পরিবার সম্পর্কে এমন কথা বলতে পারতেন না। এখন নিজেকে বাঁচাতে উল্টোপাল্টা বকতে শুরু করেছেন। নতুন করে ওবায়দুল কাদেরকে বীর মুক্তিযোদ্ধা বলে তিনি হাসির পাত্রে পরিণত হয়েছেন। অনেকে তাকে জোকার উপাধিও দিচ্ছেন। একরাম চৌধুরীকে মানসিক ভারসাম্যহীন বলেও কেউ কেউ অভিহিত করে আরো বলেন, তিনি একদিন এক কথা বলছেন। আওয়ামী লীগের একজন সংসদ সদস্য এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে স্বৈরশাসক এরশাদ এবং বর্তমান সময়ের ডাকসুর সাবেক ভিপি নূরুর মতো দিনে এক কথা, রাতে আরেক কথা বলে নোয়াখালী আওয়ামী লীগের সম্মান নষ্ট করছেন বলেও দাবি করছেন অনেকে। তবে, ভোরের পাতাকে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে অদৃশ্য এক চাপের কারণেই একরাম চৌধুরী এখন আগের বক্তব্য থেকে সরে এসে নতুন ইতিহাস বলছেন। তার মতো দায়িত্বশীল একজন সংসদ সদস্য এমন পাগলামি না করলেও পারতেন বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। আগামী পর্বে: বেপোরোয়া ছেলেকে নোয়াখালীর রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত করতেই একরাম চৌধুরীর যত অপচেষ্টা! (চলবে...)
|
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |