বরগুনার আমতলীর আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের মধ্য সোনাখালী গ্রামের আবুল মেম্বারের বাজারসংলগ্ন স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের নির্মাণকাজ শেষ করার আগেই বাঁধ দেবে গেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ ঠিকাদার স্বপন মৃধা নিম্নমানের কাজ করায় এ বাঁধ দেবে গেছে। তদন্ত সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট কর্তপক্ষের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
জানা গেছে, উপজেলার আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের মধ্য সোনাখালী গ্রামের আবুল মেম্বারের বাজার সংলগ্ন তাফালবাড়িয়া নদী। বর্ষার মৌসুমে ওই নদীর প্রবল স্রোতে বাজার সংলগ্ন এক’শ ৩০ মিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে যায়। এতে আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের ৫টি গ্রাম পানিতে তলিয়ে যায়। ফলে জমির ফসল ও চাষাবাদ নিয়ে বিপাকে পড়ে ওই সব গ্রামের অন্তত ১০ হাজার মানুষ। ওই ইউনিয়নের ১০ হাজার মানুষ রক্ষায় এবং নদীর ভাঙন রোধে বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ড ইমারজেন্সি প্রকল্পের অধিনে বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। গত বছর নভেম্বর মাসে প্রায় ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে এক’শ ৩০ মিটার বাঁধ নির্মাণকাজের দরপত্র আহ্বান করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ওই কাজ পায় পটুয়াখালীর আজাদ এন্টার প্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
অভিযোগ রয়েছে ঠিকাদার স্বপন মৃধা বাঁধ নির্মাণকাজের শুরুতেই অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছেন। প্রাক্কলনে উল্লেখ আছে মাটি ওজিও ব্যাগ দিয়ে টেকসই বাঁধ নির্মাণ করা। ওই বাঁধের জন্য কাগজে কলমে দুই হাজার ৩’শ জিও ব্যাগ প্রস্তুত দেখানো হলেও বাস্তবে তা করা হয়নি এমন অভিযোগ স্থানীয় বারেক প্যাদা ওমনির হাওলাদারের। তারা আরো অভিযোগ করেন বাঁধ রক্ষায় বাঁশের পাইলিং দেওয়া হলেও তা ছিল নড়বড়ে। আট দিনের মাথায় নড়বড়ে পাইলিং ভেঙে জিও ব্যাগ নদীতে দেবে গেছে। এতে হুমকির মুখে পরেছে বাঁধ। স্থানীয়দের অভিযোগ নিম্নমানের কাজ করায় আসছে বর্ষার মৌসুমে পানির স্রোতে বাঁধ ভেঙে যাবে। এদিকে বাঁধের ভেতরের পাদদেশ সংলগ্ন স্থান থেকে মাটি কেটে বাঁধনির্মাণ করা হয়েছে। একটু বৃষ্টি হলেই ওই বাঁধ ধসে পরবে। গতকাল বুধবার সরেজমিনে দেখা গেছে, ঠিকাদারের তত্ত্বাবধায়ক সেলিম মিয়া শ্রমিক দিয়ে কাজ করাচ্ছেন। বাঁধের পাইলিং ভেঙে জিও ব্যাগ নদীতে দেবে গেছে।
স্থানীয় নান্নু প্যাদা বলেন, ঠিকাদার স্বপন মৃধা পাইলিং না করেই জিও ব্যাগ ফেলেছে। ফলে বাঁধে জিও ব্যাগ দেয়ার আট দিনের মধ্যেই বাঁধ দেবে গেছে। তিনি আরো বলেন, ঠিকদার নিম্নমানের কাজ করায় বৃষ্টি এলেই ওই বাঁধ ভেঙে যাবে।
ঠিকাদার স্বপন মৃধার তত্ত্বাবধায়ক মো. সেলিম মিয়া বলেন, ঠিকাদার আমাকে যেভাবে কাজ করতে বলেছে আমি সেইভাবে কাজ করছি।
বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (এসও) মো. আজিজুর রহমান সুজন বলেন, দেবে যাওয়া স্থানে জিও ব্যাগ ফেলে বাঁধ ঠিক করে দেওয়ার জন্য ঠিকাদার স্বপন মৃধাকে বলা হয়েছে। বাঁধ দেবে যাওয়া ও নিম্নমানের কাজের বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদার স্বপন মৃধা বলেন, প্রয়োজনীয় ও নিয়মমত জিও ব্যাগ করেছি। কোন অনিয়ম করা হয়নি।