শিরোনাম: |
রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র: চাকরি হারাচ্ছেন গণপূর্তের ইলিয়াস-সোহান-রাশেদ
উৎপল দাস
|
![]() রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র: চাকরি হারাচ্ছেন গণপূর্তের ইলিয়াস-সোহান-রাশেদ নির্ভরযোগ্য সূত্র, গণপূর্ত অধিদপ্তরের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা হিসাবে নির্বাহী প্রকৌশলী ইলিয়াস আহমেদ সাবেক একজন মন্ত্রীর আপন ভাইয়ের মাধ্যমে কতিপয় লোকের (যারা বাংলাদেশ বিরোধী হিসাবে কাজ করছে) পাকিস্তান সফরের সময় বড় অংকের অর্থ যোগান দিয়েছেন। উত্তরবঙ্গের বিএনপি-জামায়াত অধ্যুষিত এলাকা হিসাবে বগুড়া-সিরাজগঞ্জের লোক হিসাবে পরিচিতদের নিয়ে একটি সিন্ডিকেটও গড়ে তোলেন এই ইলিয়াস। তার অপকর্মের সহযোগী হিসাবে বেছে নেন উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী সোহানুর রহমান এবং মীর রাশেদুল হাসানকে। এই তিনজনের কালো সিন্ডিকেট মিলে ২০১৯ সালেই ১৭ টি ২০ তলা ভবন নির্মাণ প্রকল্প থেকে কমপক্ষে ৩০ কোটি টাকা অবৈধভাবে আয় করেছে। এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে ৭ নভেম্বর ২০১৯ সালে একটি লিখিত অভিযোগ জমা হয়। তারপর দীর্ঘ সময় ধরে তদন্ত করে দুদকের পক্ষ থেকে এই বিতর্কিত তিনজন প্রকৌশলীকে চাকরি থেকে অব্যাহতি প্রদান অথবা কমপক্ষে বদলির সুপারিশ করা হয়েছে বলেও জানা গেছে। দুদক তদন্ত করে ইতিমধ্যেই নির্বাহী প্রকৌশলী ইলিয়াস, সোহান এবং রাশেদ সিন্ডিকেট মিলে ১৭ টি ২০ তলা ভবন নির্মাণ প্রকল্পের প্রাক্কলিত মূল্য প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার মধ্যে অসাধু ঠিকাদারদের মাধ্যমে ২০০ কোটি টাকার বিল নিয়ম ভেঙেই প্রদান করেছে। সেখান থেকে ৩০ কোটি টাকার কমিশন বাণিজ্য করে অবৈধভাবে এই টাকা ভাগবাটোয়ারা করেছে বলেও প্রমাণ পেয়েছে দুদক। এদিকে, বিএনপি-জামায়াত সমর্থক ইলিয়াস, সোহান এবং রাশেদ গং মিলে এই টাকার ভাগ সাবেক মন্ত্রী, তার ভাই ও ব্যক্তিগত সহকারীকেও দিয়েছিল বলে একটি বিশেষ সংস্থার প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। সেই টাকা দিয়ে মন্ত্রীর ভাই এলাকায় নানাজনের বিশেষ করে সংখ্যালঘুদের জমি দখল কয়েকটি স্থাপনা গড়ে তুলেছেন। এমনকি ওই মন্ত্রীর কথিত একজন স্ত্রী যিনি সিঙ্গাপুরে অবস্থান করছেন, তার কাছেও অর্থপাচার করেছেন বলে জানা গেছে। মন্ত্রীর এপিএস যিনি এখন স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতেও ঠাঁই পেয়েছেন তাকেও তিনজনের সিন্ডিকেট জাপান গার্ডেন সিটিতে ফ্ল্যাট কিনে দিয়েছেন বলে জানা গেছে। সাবেক মন্ত্রীর এপিএস যিনি বর্তমানেও তার এপিএস হিসাবে কাজ করছেন, তিনি এই ইলিয়াসের মাধ্যমে টাকা সংগ্রহ করতেন বদলি বাণিজ্যের জন্য। ইলিয়াসই টাকা সংগ্রহ করতেন সারাদেশ থেকে। কাকে কোথায় কত টাকার বিনিময়ে বদলি করা হবে, সেটি আবার নির্ধারণ করতেন মন্ত্রীর ভাই। এদিকে, পাকিস্তানে কতিপয় লোককে পাঠানোর অর্থ যোগানদাতা ইলিয়াস বর্তমানে দুদকের মামলা থেকে বাঁচতে মোটা অংকের টাকা বরাদ্দ করেছেন বলে নিজের ঘনিষ্ঠজনকেই জানিয়েছেন। এছাড়া এই দুর্নীতিবাজ নির্বাহী প্রকৌশলী ইলিয়াস ঢাকা মেট্রোজোনের সিটি ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী শওকত উল্লাকে সরিয়ে দিয়ে সেখানে বসতে চাচ্ছেন বলে তদবির শুরু করেছেন। এক্ষেত্রে তিনি গণপূর্ত অধিদপ্তরের মূল ভবনে বসেই ২ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন বলে নিজের মুখেই বলেছেন তারই সহকর্মীর কাছে। সেই সহকর্মী ভোরের পাতাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। উল্লেখ্য, নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইলিয়াস আহমেদ, উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী সোহানুর রহমান এবং মীর রাশেদুল হাসানের বিরুদ্ধে সকল তথ্য প্রমাণ ভোরের পাতার হাতে সংরক্ষিত রয়েছে। এসব অভিযোগের বিষয়ে প্রধান অভিযুক্ত নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইলিয়াস আহমেদকে কয়েকবার ফোন করা হলেও তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে। এমনকি তার ফোনে ক্ষুদেবার্তা পাঠালেও তিনি আর প্রতিউত্তর করেননি। এ বিষয়ে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্ম সচিব ভোরের পাতাকে বলেন, কোনো ব্যক্তিযদি রাষ্ট্র বিরোধী অর্থ যোগান দিয়ে থাকেন তিনি প্রশাসনের যে স্তরের কর্মকর্তাই হোন না কেন, তাকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে। আমাদের কাছে চিঠি আসা মাত্র সেটি প্রতি মন্ত্রী এবং সচিবের মাধ্যমে সরকারের সর্বোচ্চ মহলে জানিয়ে অবশ্যই ব্যবস্থা নিবো। দুর্নীতিবাজ এবং রাষ্ট্রবিরোধীদের পক্ষে বর্তমান সরকার কোনোভাবেই অবস্থান নিবে না কেউ। আগামী পর্বে: সাবেক মন্ত্রী এবং দুই অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর ষড়যন্ত্রের খতিয়ান
|
« পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ » |