স্বাস্থ্যবিধি মানতে পারলে করোনার দ্বিতীয় ঢেউতেও আমরা সফল হতে পারবো: ড. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া কাঞ্চন
আমাদের দেশে করোনার অফিসিয়াল অস্তিত্ব ধরা পড়ার পর থেকে পার হতে চলেছে প্রায় ১০ মাস। প্রথম দিকে এটা নিয়ে যতটা অতঙ্ক এবং ভোগান্তি ছিলো সেটা এখন অনেকটা কেটে গেছে। কিন্তু শীতে করনার প্রকোপ বাড়তে পারে আবার। শীতে করোনার প্রকোপ বাড়ে জানিয়ে সেখান থেকে নিজেদের সুরক্ষিত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কথায় আছে ‘প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম।’ করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে কথাটি আরও বেশি প্রযোজ্য। তাই বাঁচতে হলে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। কেবল আইন মানার জন্য নয়, নিজের জীবনের ঝুঁকি এড়ানোর জন্যও। তাই করোনার দ্বিতীয় ঢেউতে স্বাস্থ্য নির্দেশনা আরও কঠোরভাবে মানতে হবে।
দৈনিক ভোরের পাতার নিয়মিত আয়োজন ভোরের পাতা সংলাপের ১৭০ তম পর্বে এসব কথা বলেন আলোচকরা। বৃহস্পতিবার (২৬ নভেম্বর) আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া কাঞ্চন, ইতালি আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহাতাব হোসেন। দৈনিক ভোরের পাতার সম্পাদক ও প্রকাশক ড. কাজী এরতেজা হাসানের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন সাবেক তথ্য সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ।
অধ্যাপক ড. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া কাঞ্চন বলেন, আমার বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাথে জড়িত অনেক দিন ধরেই কিন্তু বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রেক্ষাপট নিয়ে এতো সুন্দর করে পরিবেশন কেউ করেছে কিনা আমার জানা নেই, এইজন্য আমি ভোরের পাতা ও বিজ্ঞ সঞ্চালককে আমার অশেষ কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ প্রকাশ করছি। দেখুন গত বছরের শেষের দিক থেকে শুরু হওয়া করোনা ভাইরাসের এই মহামারী দিব্যি সারা বিশ্ব সহ বাংলাদেশে তার তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে। একজায়গায় রোগ নিয়ন্ত্রণ আসতে না আসতেই নতুন আরেক জায়গায় এর বিস্তার শুরু হচ্ছে। আমরা এটাকে সমুদ্রের ঢেউয়ের সাথে তুলনা করতে পারি। ঢেউ যেমন একটার পর একটা পারে ভেঙ্গে পরে ঠিক তেমনই করোনা একটার পর একটা তার তাণ্ডব খেলা মানুষের দিকে চালিয়ে যাচ্ছে। করোনার দ্বিতীয় ধাপ যেটা বলা হচ্ছে সে সম্পর্কে করোনা বিসয়ে মার্কিন উপদেষ্টা ড. এন্থনি ফাওচি সুন্দর একটি কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন যখন প্রতিদিনের হিসেবে নতুন আক্রান্ত্র করোনা রোগীর সংখ্যা শতকরা ১০ এর কম হবে তখন আমরা ধরে নিতে পারি এই ভাইরাস আপাতত নিয়ন্ত্রণে এসেছে। কিন্তু আমরা কি দেখতে পাচ্ছি। আমাদের বাংলাদেশে গত একমাসে মমৃত্যুর হার কিছুটা কমে এসেছিল কিন্তু এখন আবার নতুন করে আমরা যে চিত্রটা দেখতে পারছি সেটা সম্পূর্ণ ভিন্ন। বাস্তবতা হচ্ছে, প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থামছে না। থেমে নেই মৃত্যুও। শনাক্তের সংখ্যাও অনেক। তবুও বাড়ছে না সচেতনতা। ছোঁয়াচে এ রোগের কোনো প্রতিষেধক নেই। কবে ভ্যাকসিন আসবে তারও নেই কোনো নিশ্চয়তা। এজন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচার উপায়। মাস্ক পরা, সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, উপসর্গ দেখা দিয়ে হোমকোয়ারেন্টিনে থাকার মধ্য দিয়ে ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। বাঁচতে হলে এসব স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। এই করোনার মধ্যেও আমাদের যে চলমান অর্থনীতি জননেত্রী শেখ হাসিনার আস্থা ও নির্দেশে এই মুহূর্তে আজকে আমাদের জিডিপি গ্রোথ ৫.২৪% , মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৬৪ মার্কিন ডলার এবং ক্যাপিটাল জিডিপি ১৯৭০ ডলারে উন্নীত হয়েছে। বর্তমানে এই সময়ে মুদ্রাস্ফীতি ৫.৬৫%। রেমিটেন্স প্রাপ্তিতে বাংলাদেশের অবস্থান এই মুহূর্তে অষ্টম। এবং আমি অত্যন্ত আশাবাদী এই মুজিব শতবর্ষে আমাদের রিজার্ভের পরিমান ৫০বিলিয়ন অতিক্রম করে ছাড়বো ইনশাল্লাহ। আমরা যুক্তরাষ্ট্রে যে পণ্য রপ্তানি করি তা এই করোনকালীন সময়ে অনেক কমে গিয়েছে, একটু ধাক্কা খেয়েছি এই খাতে আমরা। আমরা সবচে বেশি রেমিটেন্স পাচ্ছি সৌদি আরব থেকে। গত তিন মাসে আমরা সৌদি আরব থেকে ৫১ হাজার কোটি টাকার রেমিটেন্স পেয়েছি। আজকে আমদের দেশে কৃষির এক অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছি। আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতে ৪০.৬% অবদান রাখে এই কৃষি খাত। আজকে আল্লাহর রহমতে ও শেখ হাসিনার নেতৃত্ব গুনে আমাদের ৪ কোটি মেট্রিক টন খাদ্য মজুদ আছে। আমাদের বিভিন্ন উৎপাদনে অনেক ভালো করছি আমরা বিশেষ করে মাছ চাষে, সবজি চাষে আমরা অনেক এগিয়ে গিয়েছি।