প্রকাশ: মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪, ২:২৭ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
চলছে বোরো ধানের মৌসুম। মাঠ থেকে বোরো ধান কেটে ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষীরা। তবে বাঁধ সাজছে অসহনীয় তাপদাহ। তীব্র তাপদাহে ওষ্ঠাগত জনজীবন। সকাল থেকে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে সূর্যের উত্তাপ। তীব্র এই তাপপ্রবাহে সব থেকে বেশি সমস্যা পড়ছেন ধান কাটা শ্রমিকরা। রোদের তীব্রতা বেশি হওয়ায় ফসল কাটতে বেগ পেতে হচ্ছে তাদের। এতে করে মাঠ ভরা সোনালী ফসল ঘরে তুলতে কিছুটা শঙ্কায় দিন কাটছে চাষীদের।
ফসল ভালো হলেও একদিকে রোদের তীব্রতা অপরদিকে উচ্চ মূল্যে কৃষাণ ক্রয় এদুয়ের চিন্তায় চাষিদের কপালে এখন চিন্তার ভাজ। উচ্চ মূল্যে চুক্তি ভিত্তিক কৃষাণ ক্রয় করে আনলেও দুর্বিষহ খরতাপে মাঠের ধান কাটা শেষ না করেই নানা অজুহাতে বাড়ি ফিরে যাচ্ছে হাট থেকে ক্রয় করে আনা কৃষাণেরা। ফলে অনেকটা বাধ্য হয়েই মাথায় মাথাল ও হাতে কাঁচি নিয়ে নিজের জমির ফসল কাটতে নিজেই নেমে পড়ছেন জমির মালিকরা। তবে একটু কাটার পরেই তীব্র এই গরমে হাঁসফাঁস করছেন তারাও। সরেজমিন উপজেলার ধনেশ্বরগাতী, শালিখা, শতখালী, বুনাগাতীসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমনি চিত্র চোখে পড়ে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, কেউ ধান কাটছে, কেউ মাথাই করে বাড়িতে বয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে, কেউ পলেথিনের তাবু টানিয়ে মাঠেই সেরে ফেলছেন মাড়াইয়ের কাজ। অনেকে আবার ধানক্ষেতের পাশে ছায়া জায়গায় বসে বিশ্রাম নিচ্ছেন সাথে পান করছেন স্যালাইন ও খাবার পানি। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে দেয়া এক তথ্য থেকে জানা যায়, এবছর বোরো ধান রোপণ করা হয়েছে ১৩ হাজার ৫ শত ৫৫ হেক্টর জমিতে যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ শ ১০ হেক্টর বেশি। যেখানে হেক্টর প্রতি ফলন হয়েছে ৬.৫ টন। ফলন ভালো হলেও বৈশাখী ঝড় ও তাপদাহের কারণে ঘোরে তোলা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন চাষীরা। কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত ৩৫ শতাংশ জমির ফসল কর্তন করা হয়েছে। পরিবেশ অনুকূল থাকলে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে মাঠের সব ফসল কাটা হয়ে যাবে বলেও জানিয়েছেন তারা।
শালিখা উপজেলার আড়পাড়া ইউনিয়নের দিঘী গ্রামের চাষি রতন বিশ্বাস বলেন, ৯ একর জমিতে ধান লাগাইছি , আলহামদুলিল্লাহ, ফলনও ভালো হয়েছে তবে কৃষাণের মূল্য বেশি থাকায় ধান কাটতে খরচ বেশি পড়ে যাচ্ছে। তাই ধানের মূল্য ভালো না পেলে চাষের খরচ উঠানো খঠিন হয়ে যাবে।
একই ইউনিয়নের পুকুরিয়া গ্রামের চাষি তোবারেক মোল্যা বলেন, বেশি টাকা দিয়েও জন (কৃষাণ) পাওয়া যাচ্ছে না, তাই বাধ্য হয়ে নিজেরাই কাজ শুরু করেছি । আবহাওয়া ভালো থাকলে দশ দিনের ধান কাটা শেষ হয়ে যাবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আলমগীর হোসেন বলেন, চলমান এই তাপদের মধ্যে কৃষকদেরকে মাথায় মাথাল লাগিয়ে কাজ করা, খাবার স্যালাইন ও বিশুদ্ধ পানি পান করাসহ নানাবিধ পরামর্শ দেয়া পাশাপাশি দিনের প্রথমার্ধে কাজে যাওয়া ও একটানা কাজ না করে বিরতি দিয়ে কাজ করার অনুরোধ করছি।