প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২১ মার্চ, ২০২৪, ১:২০ এএম | অনলাইন সংস্করণ
তারাবি শব্দটি নির্গত হয়েছে রাহাতুন শব্দ থেকে। আর রাহাত অর্থ আরাম, শান্তি অর্থাৎ তারাবি হলো আরামের নামাজ, শান্তির নামাজ। স্বস্তির সাথে আদায়ের নামাজ
রাসূলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পরপর দু’দিন তারাবি নামাজ জামাতবদ্ধভাবে পড়েছেন। সাথে শরিক ছিলেন সাহাবায়ে কেরামও। তৃতীয় কিংবা চতুর্থ দিন হুজুর আর হুজরা থেকে বের হননি। প্রিয় উম্মতের ওপর এটি আবার ফরজ হয়ে যায় কি না সে আশঙ্কায়। নববী ও সিদ্দিকী যুগ পেরিয়ে ওমরি শাসনামলের সূচনাকাল নাগাদ তারাবির নামাজের এ রীতিই (একা একা নামাজ আদায় করা) বহাল থাকে যথারীতি।
রমজানের কোনো এক রাতে উমর রা: মসজিদে নববীতে তাসরিফ নিয়ে যান এবং দেখতে পান যে, মসজিদের কোথাও একাকী নামাজ হচ্ছে। আবার কোথাও ছোট ছোট জামাত হচ্ছে। তিনি চিন্তা করলেন, সব নামাজিকে এক ইমামের পেছনে একত্র করা উচিত। তখন সাহাবিদের ইজমা বা ঐকমত্যের আলোকে জামাতবদ্ধভাবে ২০ রাকাত তারাবির আদেশ জারি করেন এবং উবায় ইবনে কা’ব রা:-কে ইমাম নিযুক্ত করেন।
রমজানের আরেক রাতে বেরিয়ে দেখলেন, লোকেরা সাহাবি উবায় ইবনে কা’ব রা:-এর ইমামতিতে জামাতবদ্ধভাবে তারাবি পড়ছে। ফলে তিনি দারুণ খুশি হলেন এবং আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বললেন, ‘বাহ বড় চমৎকার এ কাজটি!’ হজরত উসমান রা:-এর যুগেও ২০ রাকাত তারাবি নামাজ পড়া হতো।
সাহাবা, তাবেঈন, তাবয়ে তাবেঈনের স্বর্ণযুগ পেরিয়ে দেশে দেশে কালে কালে শীর্ষস্থানীয় বুজুর্গ ওলামায়ে কেরাম ২০ রাকাত তারাবি নামাজ আদায় করেছেন এ পদ্ধতিতেই ধীরে-সুস্থে আর শান্তশিষ্টে। বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ ঐতিহ্যবাহী দুই মসজিদ মসজিদে হারাম ও মসজিদে নববীতে ২০ রাকাত তারাবি নামাজ পড়া হয় ফরজ নামাজের মতোই ধীরে ধীরে। সময় লাগে আড়াই ঘণ্টা।
ব্যতিক্রম কেবল বাংলাদেশ। এখানকার অনেক মসজিদেই তারাবি হয় বেজায় দ্রুতগতিতে এবং এতটাই অস্পষ্টভাবে যে, সহসা কিছু বুঝে ওঠা যায় না। এমনও মুসল্লি আছে, যাদের দৃঢ়বিশ্বাস যে হাফেজ যত দ্রুত তারাবি পড়ান, তিনি তত দক্ষ ও কুশলী হাফেজ।
দ্রুতগতির মহা ভুল থেকে বেরিয়ে ধীর গতির নামাজে মনোযোগী হই। বিশুদ্ধ তিলাওয়াতে পড়ি। মুসল্লি ও মসজিদ কমিটির কাছে তারাবির হাকিকত ও বাস্তবতা তুলে ধরি।